স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় নিজের দায়ের করা মামলায় জামিন মেলেনি সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন জানালে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
এদিকে একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের শ্বশুরের দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পিবিআই। একই ঘটনায় দুই মামলা চলতে পারে না- তাই শ্বশুরের দায়ের করা মামলাটির ডকেট বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার ডকেটের সঙ্গে একীভূত করার আবেদন জানানো হয়।
জিআরওর মাধ্যমে আদালতে এ আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই এর পরিদর্শক ওমর ফারুক।
তিনি মঙ্গলবার মিতু হত্যার ঘটনায় একটি মামলাই (বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটি) চলবে। যদিও বাবুল আক্তার নিজেই স্ত্রী হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই ইতিমধ্যে ওই মামলায় তাকে বাদী থেকে আসামি করে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন জিইসি মোড় এলাকায় মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পরদিন স্বামী বাবুল আক্তার অজ্ঞাত তিন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে সিএমপির ডিবি পুলিশ।
পরে এ মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই)। সংস্থাটির তদন্তে উঠে আসে স্বামী বাবুল আক্তারই মিতুকে হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী। এ ঘটনায় গত বছরের ১২ মে মিতুর পিতা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
অন্যদিকে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটিতে এর আগে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হলে আদালতে এর বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দাখিল করেন বাবুল আক্তার। আদালত তার সেই নারাজি আবেদন খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে নিজের মামলায় আসামি হবার পর বাবুল আক্তার ওই মামলায় জামিন আবেদন করেন।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে জামিন আবেদন শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুর করে দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার বাদী বাবুল আক্তার হলেও এই ঘটনার সঙ্গে তার নিজের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। তাই তাকে (বাবুল আক্তারকে) বাদী থেকে আসামি করা হয়। আসামি হিসেবে তাই মঙ্গলবার আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, যেহেতু একই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। তাই দুটি মামলা একসঙ্গে চলতে পারে না। পিবিআই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু) দাখিল করেছে। ওই মামলার ডকেট পূর্বের মামলাটির সঙ্গে একীভূত করার আবেদন করেছে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিতু হত্যা মামলায় এখন থেকে বাবুল আক্তারের দায়ের করা সেই মামলাটিই চলবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।