সম্প্রচার মাধ্যম ডিজিটাল করতে আগামি ১লা এপ্রিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সেট টপ বক্স কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টিভি কেবল মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

এসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার মাধ্যম ডিজিটাল করতে আমরা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি সেটাকে বাস্তবায়ন করতে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা জানেন এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছিলো। ডিজিটালাইজড করতে না পারার কারণে এই মাধ্যমের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন একই সঙ্গে দেশও বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার যে ভ্যাট-ট্যাক্স এ খাত থেকে পায় সেটি সঠিকভাবে আদায় হয় না। এটি বছরে প্রায় দেড় থেকে হাজার কোটি টাকার কম নয়। এ জন্য আমরা গ্রাহককে আরও ভালো সেবা দেয়ার জন্য, এই সেবার দেয়ার পেছনে যারা আছে তারাও যাতে তাদের ন্যায্য হিস্যাটা পায় এবং রাষ্ট্র যাতে বঞ্চিত না হয় এ জন্যই এটিকে আমরা ডিজিটালাইজড করতে চাই।

তিনি বলেন, আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা জানেন যে এ উদ্যোগ নেয়ার পর একটি মামলা হয়েছিলো হাইকোর্টে। আমাদের উদ্যোগের উপর একটি স্থগিতাদেশ এসেছিলো। সেটি আমরা মন্ত্রণালয় থেকে ফেইস স্থগিত হয়েছে। অর্থাৎ এখন ডিজিটালাইজড করার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।

মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি টাইম ফ্রেম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আলোচনায় বসেছি। যে আলোচনাটা হয়েছে সেটি হচ্ছে, আমরা গ্রাহককে দু মাস সময় দিয়ে, অর্থাৎ আজ হলো ১লা ফেব্রুয়ারি, ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ৩১ মার্চের মধ্যে সব গ্রাহককে ডিজিটাল সেট টপ বক্স গ্রহণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। ১লা এপ্রিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে যাতে আমরা সেটটপ বক্স সবাইকে দিতে পারি সে লক্ষ্য ঠিক করে সবাই কাজ করবো।

ড. হাছান জানান, আরও দু মাস সময় দিয়ে ৩০ মে’র মধ্যে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে একই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। ১লা এপ্রিল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের যেসব গ্রাহক সেটটপ বক্স নেবেন না বা বসাবেন না তারা অনেকগুলো চ্যানেল দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। একই বিষয় কার্যকর হবে ১লা জুন থেকে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহরগুলোতে। দেশে কয়েক লাখ সেটটপ বক্স এরই মধ্যে আনা হয়েছে যেগুলো মজুদ আছে। আমরা ধাপে ধাপে যাবো। এখানে অগ্রগতিটা দেখে জেলা শহরে কি করা যায় সেটা ঠিক করা হবে।

তিনি আরও বলেন, পুরো কেবল অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি নীতিমালা তৈরির বিষয়টি আজকের আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি যে একটি নীতিমালা করা প্রয়োজন। আইনের আলোকে একটি নীতিমালা ও পরামর্শক কমিটি করার কথা বলা আছে। আমরা এ বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছি। এটি করা হবে। আমাদের একটু সময় নিয়ে করতে হবে। স্টেক হোল্ডার যারা আছে তাদের সঙ্গে কথা বলে একটি কমিটি করে দিয়ে আমরা নীতিমালাটা তৈরি করবো।

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সেটটপ বক্স সারা পৃথিবীতে গ্রাহককেই পয়সা দিয়ে নিতে হয়। আমরা আগেও এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি, সূলভ মুল্যে যাতে দেয়া হয়। ইন্সটলমেন্টে যাতে কেনা যায়। আমি মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সঙ্গে কথা বলেছি, তারা যাতে এখানেই সেটটপ বক্স তৈরি করতে পারে। তারা সে উদ্যোগটা নিচ্ছে।

খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরছেন, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার সংবাদ এসেছে, এজন্য স্বস্তি প্রকাশ করছি এবং আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যাতে বাসায় ফিরে যান। তিনি যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন সে জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।

তিনি বলেন, বিএনপি যে তার স্বাস্থ্য নিয়ে রাজনীতি করেছে, বেগম জিয়ার সুস্থতার মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে তারা। ডাক্তারদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে। বলেছে বেগম জিয়াকে যদি বিদেশে নেয়া না হয় তাহলে তার যেকোনো সময় যেকোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই যে কথাগুলো বলেছিলো, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে তারা যে অপরাজনীতি করেছে এটিই আজকে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বেও তারা একই কাজ করেছিলো। আগেও যখন বেগম জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তখনও একই কথা বলেছিলেন। বিদেশ না নিলে তাকে বাঁচানো সম্ভব না, এবারও একই কথা বলেছিলো। বিএনপি যে মিথ্যাচার করে, এটি প্রমাণিত হলো বেগম জিয়ার সুস্থ হওয়ার মাধ্যমে।

এসময় তথ্যসচিব মো. মকবুল হোসেন, বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (এটকো)’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।