বিপুল পরিমাণ ভয়ঙ্কর মাদক আইস ও ইয়াবা এবং দুটি বিদেশি পিস্তল জব্দ করেছে র‌্যাব। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে সমুদ্রপথে লবণের আড়ালে মাদক আনত বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, বুধবার (২ এপ্রিল) রাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে আইস কারবারের অন্যতম হোতা মো. জসিম উদ্দিন, মকসুদ মিয়া, মো. রিয়াজ উদ্দিন ও শাহিন আলমসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২ কেজি আইস (যার আনুমানিক দাম ৫০ কোটি টাকা), ১ লাখ পিস ইয়াবা, ৪ হাজার ৬০০ পিস চেতনানাশক মাদক, দুটি বিদেশি পিস্তল, ৯ রাউন্ড গুলি, ২টি টর্চলাইট, বার্মিজ সিম কার্ড ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তাকৃত ব্যক্তিরা মিয়ানমারের মাদক কারবারি চক্রের যোগসাজশে বাংলাদেশে আইস নিয়ে আসে। জসিমের নেতৃত্বে ওই মাদক সিন্ডিকেটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ওই সিন্ডিকেটের সদস্য ১২ থেকে ১৫ জন। তারা মূলত সোনাদিয়া দ্বীপকেন্দ্রিক মাদক চোরাকারবারি চক্র। ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকায় নানা কৌশলে আইস ও ইয়াবা সরবরাহ করত তারা। মূলত সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক নিয়ে আসে ওই চক্রের সদস্যরা। বাংলাদেশের ভেতরেও তারা নৌপথে মাদক পরিবহন করে।

র‌্যাব জানায়, মিয়ানমারের মাদক চক্রের সদস্যরা সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে ট্রলারের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই মাদক চক্রের কাছে ইয়াবা ও আইসের চালান হস্তান্তর করে। সাগরপথে মাদকের চালান গ্রহণ ও নিরাপদ স্থলে পৌঁছানোর জন্য এ চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে জেলেদের ছদ্মবেশে গভীর সমুদ্রে অবস্থান করে। মালামাল গ্রহণের পর সুবিধাজনক সময়ে তারা সোনাদিয়া দ্বীপে চলে আসে। এসব ইয়াবা ও আইসের চালান সোনাদিয়া ও মহেশখালী দ্বীপের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়। পরে সুবিধামতো সোনাদিয়া থেকে বোটের মাধ্যমে নোয়াখালীর হাতিয়াতে আইস ও ইয়াবার চালান নিয়ে আসা হয়। এ চালান হাতিয়ায় সংরক্ষণ করে চক্রের সদস্যরা। পুনরায় নৌপথে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ও ঢাকার আশেপাশে অথবা সুবধিাজনক স্থানে পৌঁছানো হয়। মুন্সীগঞ্জে পৌঁছানোর পর একটি চক্র আইস ও ইয়াবার চালান সড়ক পথে ঢাকায় নিয়ে আসে।

জসিম ৫-৭ বছর ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। সে লবণ ব্যবসার আড়ালে আইসের কারবার করে। মিয়ানমারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশে মাদক আনত জসিম ও তার সহযোগীরা।