বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ী এলাকায় ঈদের নামাজ পড়া নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ২ জন।

আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। আহতদের মধ্যে রাজিবুল ইসলাম (৩০), কাদের মোল্যা (৪০), সোহেল শেখকে (২০) বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মাসুদ আহমেদ (৪০) ও আলমগীর আহমেদকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ড করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সংঘর্ষের এলাকা থেকে পুলিশ ৫জনকে আটক করেছে। সংঘর্ষে দুই জনের মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিপক্ষের গরু, ছাগল, ঘরে থাকা পাট, পেঁয়াজ, ঘরে থাকা নগদ টাকা স্বর্ণ লুটপাট করে ও আগুন দিয়ে বচসত ঘর পুড়িয়ে ফেলেছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের নামাজ পড়া নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হলে দুপুর ২টার দিকে ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহালবাড়ি গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফা জামান সিদ্দিক গ্রুপ ও দেলোয়ার মেম্বারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোস্তফা জামান সিদ্দিকের পক্ষের আকিদুল মোল্যাকে (৪৬) ও খাইরুল মোল্যাকে (৪৫) গুরুতর আহত অবস্থায় বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে আকিদুলকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং খায়রুল শেখকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ফরিদপুর যাওয়ার সময় পথের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।

খাইরুলের মৃত্যুর পর তার আত্মীয় স্বজন লাশটি বোয়ালমারী থানায় নিয়ে আসে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্মরত ডা. আতোষি বলেন, হাসপাতালে আসার আগে আকিদুলের মৃত্যু হয়েছে। খাইরুলের অবস্থাও খারাপ হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফার্ড করা হয়।

দেলোযার মেম্বারের সমর্থক আরিফ খালাসী বলেন, আমি শুনেছি যে, ঈদের নামাজ পড়তে গেলে আমজাদ খালাসি, নুর আলমকে জামাল মাতুব্বরের ছেলে আরজ নামাজ পড়তে দেয় না। পরে মোস্তফাজামান সিদ্দিকী তার লোকজন নিয়ে ফরিদের বাড়িতে হামলা চালায়।

হামলার পর দেলোয়ারের সমর্থকরা এক জায়গায় হলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। ঈদের নামাজ পড়ে আমি আমার পরিবারের ভাই ও সকলকে নিয়ে আমার শুশুর বাড়ি বোয়ালমারী পৌরসভার কলারন গ্রামে দাওয়াত খেতে আসি। সংঘর্ষের সময় আমরা কেউ এলাকায় ছিলাম না। পরে খবর পেলাম এলাকায় সংঘর্ষ বেধেছে।

তিনি আরো বলেন, সংঘর্ষে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষরা আমজাদ খালাসি, ফরিদ মেলেটারীর বাড়ি লুট করে এবং পুড়িয়ে দেয়, আব্বাসের ৪টি গরু, আহমেদের ৩টি গরু, মুকুলের ৩টি গরু, ইসলামের ২টি গরু, ২টি ছাগল, জামিরে ১২০ মন পাট লুট করে নিয়ে গেছে। ইনদাদের ১০ বছরের ছেলেকে কুপিয়ে আহত করে।

এ ছাড়া প্রতিপক্ষরা আরো অনেকের বাড়ি ঘরে লুটপাট করে। লুটপাট করে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। থানা অফিসার ইনচার্জ বলেন, সংঘর্ষের এলাকা থেকে ৫জনকে আটক করা হয়েছে।

ফরিদপুরের মধুখালী সার্কেল এএসপি সুমন কর জানান, সংঘর্ষে আকিদুল ও খাইরুল নামের দুই জন মারা গেছে। সংঘর্ষের এলাকা বর্তমানে শান্ত আছে। এলাকায় ডিবি পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।