ঠাকুমা

রাশেদুল ইসলাম

তিস্তা পাড়ে দেখেছি আমি
অসহায় এক নারী,
কলা পাতায় গড়েছে সে
বাস করিবার বাড়ী।

বয়সটা তার পঞ্চাশ
কিংবা একটু বেশি,
অনাহার অনিদ্রায়
মনে হয় তা আশি।

চুল গুলো হায় সাদায় ভরা
ঝুলে পড়েছে ত্বক,
একখানা হাত হয়েছে অচল
পাথর হয়েছে নখ।

চুলোয় অনল দেখিনি আমি
গিয়েছি যতো দিন ধরে,
হাল আমলের পাতিল গুলো
ঘরে রয়েছে পরে।

সকাল দুপুর উপস রয়
রাত্রিতে একটু মিলোয়,
ভালো মন্দ করিলে জিঞ্জেস
আছি বাবা ভালোয়।

ঘড়ের ছাউনি যেমন তেমন
বেড়া টুকু তার নাই,
দুরের চোখে দেখবে যখন
অশ্রু আসবে রে ভাই।

চৈতের আলোয় ভিতর গরম
বর্ষাকালে পানি,
শীত্রকালে ঠান্ডা শীত
অল্প ঝড়ে কাপুনি।

বালুর উপর বালু দিয়ে
তৈরি করেছে খাট,
বালিশ খানা মোরক বিহীন
সেই হাল আমলের পাট।

কোমরটা বেকেছে তার
বয়সের ভাড়ে,
ঠাকুমা বলে সর্বলোকে
সম্মোধন করে তারে।

নয়ন দেখেনা দুরের পথ
এখান ফুটকি পরেছে তাই,
কানে গুজিবার পা রহিলেও
একটা কাচ যে আবার নাই।

পাইক পেয়াদা আছে কি নাই
ঠাকুমার সেটা জানা,
পাড়ার লোকের অন্ন দিয়ে
চুলোয় উঠে রে দানা।

চলিতে গেলে সাহায্য লাঠি
সঙ্গে লহিতে হয়,
তেমন একটা হয়না বাহির
শরির কাপনের ভয়।

নদীর দুকুল উপচে পড়ে
লবন মাখা জলে,
মাঝ দড়িয়ার বালু কনাও
দুখের কথা বলে।