পাঠ্যবই ছাপিয়ে সময়মতো দিতে না পারায় ২৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ও জরিমানা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) মো. মশিউজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবছরের শুরুতেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়। তবে চলতি বছরে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় সময়মতো বই ছাপিয়ে সরবরাহ না করায় তা দেওয়া যায়নি। আর সেজন্য এবার বই ছাপাতে পুনঃদরপত্র আহ্বান করতে হয়েছিল এনসিটিবিকে।
জানা গেছে, এবছর মোট সোয়া ৪ কোটি শিক্ষার্থীকে ৩৪ কোটি ৭০ লাখের বেশি পাঠ্যবই বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে। তবে নিজস্ব মুদ্রণ ব্যবস্থা না থাকায় দরপত্র আহবান করে বিভিন্ন মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে নতুন বই ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মো. মশিউজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বছরের শুরুতেই নতন বই সবার হাতে তুলে দেওয়া আমাদের অঙ্গীকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বই বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন। মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলার কারণেই এবার সময়মতো আমরা বই পৌঁছাতে পারিনি। তাই তাদের শস্তির আওতায় আনা হয়েছে।’
জানা গেছে, দরপত্রে উল্লেখিত সময়ের চেয়ে যারা ২৯ দিন বা তারও বেশি দিন বই সরবরাহে দেরি করেছে সেসব প্রতিষ্ঠান, তারাই শাস্তির মুখে পড়েছে। আর নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২৮ দিন পর্যন্ত দেরি করেছে যারা, সেগুলোকে জরিমানা করা হয়েছে। এনসিটিবির সচিব মোসা. নাজমা আখতারের সই করা চিঠি দিয়ে শাস্তির মুখে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এনসিটিবির সহকারী বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো. ওবাইদুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শাস্তি ও জরিমানার বিষটি উর্দ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলায় এবার আমরা সময়মতো বই দিতে পারিনি।’
যেসব প্রতিষ্ঠান কালোতালিকাভুক্ত
২৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৫১ দিনের বেশি সময় পর বই সরবরাহ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২৩) থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর এনসিটিবির বই ছাপার দরপত্রে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অযোগ্য থাকবে।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ঢাকার অক্ষর বিন্যাস প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস, সেডনা প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস, প্লাসিড প্রিন্টার্স অ্যান্ড প্যাকেজেস, মনির প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস, আবুল প্রিন্টিং, মেসার্স টাঙ্গাইল প্রিন্টার্স, হক প্রিন্টার্স, মেসার্স নাজমুন নাহার প্রেস, বনফুল আর্ট প্রেস, পিবিএস প্রিন্টার্স, ওয়াল্টার রোডের শিক্ষা সেবা প্রিন্টার্স, আমাজান প্রিন্টিং, উজ্জ্বল প্রিন্টিং প্রেস, বুলবুল আর্ট প্রেস, প্রেস লাইন, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের এইচআর প্রিন্টার্স অ্যান্ড পেপার সেলার ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মহানগর অফসেট প্রিন্টিং প্রেস।
ঢাকার ইউসুফ প্রিন্টার্স ও বগুড়ার শরীফা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনসকে তিন বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দুই বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকার জিতু অফসেট প্রিন্টিং প্রেস, ন্যাশনাল প্রিন্টার্স এবং আর এম দাস রোডের ওয়েব টেক প্রিন্টার্সকে। এক বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকার বাকো অফসেট প্রেস, দিগন্ত অফসেট প্রেস, এ বি কালার প্রেস ও মেসার্স প্রিন্ট প্লাসকে।
এছাড়া অঙ্গীকারনামা (৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে) দিয়ে ছাড় পেয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো ঢাকার সোমা প্রিন্টিং প্রেস, রাব্বিল প্রিন্টিং প্রেস, মেরাজ প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস, লেটার এন কালার লি., সমতা প্রেস ও কাশেম অ্যান্ড রহমান প্রিন্টিং প্রেস।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।