অভয়নগর প্রতিনিধি |খান মোঃ কামরুল

অপহরণের তিনদিন পর হাইকোর্টের আইনজীবী আবু হেনা মোস্তাফা কামাল মিলনকে (৩০) যশোরের অভয়নগর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপহরণের তিনদিন পর আইনজীবী কে অভয়নগর থেকে উদ্ধার; নারীসহ তিন অপহরণকারী আটক।

তিনি সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের এম এ হাকিমের ছেলে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার একতারপুর গ্রামের মৃত ইসহাক তরফদারের মেয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

অভয়নগর থানায় মামলা হয়েছে। আটকৃকতরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার সুলতারপুর বড়বাজার এলাকার মৃত আজমল হকের মেয়ে সুরাইয়া (২০), খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার ফরমায়েসখানা গ্রামের মোড়লপাড়ার জমির সরদারের ছেলে মো. আঃ সালাম (২৪) ও একই গ্রামের আলাউদ্দিন শিকদারের ছেলে শাহিল শিকদার (১৮)।
অপহরণের তিনদিন পর আইনজীবী কে অভয়নগর থেকে উদ্ধার; নারীসহ তিন অপহরণকারী আটক

এজাহারসূত্রে জানা যায়, আইনজীবী আবু হেনা মোস্তাফা কামাল মিলনের সাথে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাবনগর গ্রামের এস এম হারুনুর রশিদের মেয়ে রাবেয়া সুলতানা রিতুর (২২) সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। এরই সূত্র ধরে গত ৬ ফেব্রæয়ারি দুপুরে মিলন খুলনা পাইওনিয়র কলেজের সামনে এসে রিতুর সঙ্গে দেখা করে। পরে তারা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্কে ঘুরতে আসে। এসময় রিতুর বান্ধবী সুরাইয়ার সাথে দেখা হয় তাদের।

কৌশলে বান্ধবী সুরাইয়া মিলনকে অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের মৃত ইসহাক তরফদারের মেয়ের বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে আইনজীবী মিলনকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এবং মুক্তিপণ হিসেবে মিলনের পরিবারের কাছে ৩০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা না দিলে মিলনকে মেরে ফেলা হবে বলে অপহরণকারীরা হুমকি দেয়। এ ঘটনায় মিলনের দুলাভাই শরিফুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ৮ ফেব্রæয়ারি সাতক্ষীরার তালা থানায় একটি জিডি করেন।

এক পর্যায়ে অপহৃত মিলনের পরিবার জানতে পারে মিলনকে যশোরের কোন স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। পরে তাঁরা জিডির কপি নিয়ে যশোরে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) যোগাযোগ করে। পিবিআই মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে জানতে পারে মিলনসহ অপহরণকারীরা অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রামে অবস্থান করছে।

মঙ্গলবার সকালে পিবিআই অভয়নগর থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে একতারপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে অপহৃত আইনজীবী মিলনকে উদ্ধার করে। এসময় অপহরণকারীদলের নারী সদস্য সুরাইয়াকে আটক করে। পরে তাঁর স্বীকারোক্তি মোতাবেক অপহরণকারী অপর দুই যুবককে দুপুরে খুলনা থেকে আটক করা হয়। বাড়ির মালিক মৃত ইসহাক তরফদারের মেয়ে রাবেয়া সুলতানা মনি জানান, প্রায় একমাস পূর্বে সুরাইয়া ও আঃ সালাম স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আমার বাড়ি ভাড়া নেয়।

এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম জানান, যশোর পিবিআই’র সহযোগিতায় অপহৃত আইনজীবী আবু হেনা মোস্তাফা কামাল মিলনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় এক নারীসহ তিন অপহরণকারীকে। থানায় মামলা হয়েছে।