জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ ও রানীশংকৈল) আসনে প্রথম এসেই লাঙ্গল আর হাতুড়ির ‘ধাক্কায়’ জামানত হারালেন ভোটের মাঠে থাকা ২ নতুন মুখ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের এক-অষ্টমাংশ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারিয়েছেন তারা।
ঠাকুরগাঁও-৩ সংসদীয় আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হাফিজউদ্দীন ও
১৪ দলীয় জোট সমর্থিত ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী গোপাল চন্দ্র রায় ছাড়া অন্য দুই প্রার্থী আট শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের আইন অনুসারে, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রার্থীকে ২৫ হাজার টাকা জামানত হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। কোনো আসনে প্রাপ্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের চেয়েও কম ভোট পেলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জামানত হিসেবে রাখা টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত বার্তাশিট বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৪ জন। মোট ১২৮ ভোটকেন্দ্রে বৈধ ভোট পড়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার ৮২৭টি। এর মধ্যে এক লাখ ৬ হাজার ৭১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন লঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৮২১ ভোট।
জামানত বাজেয়াপ্ত দুই প্রার্থী ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোছা. আশা মনি এক হাজার ৬৮৩ ভোট ও বিকল্পধারার প্রার্থী খলিলুর রহমান সরকার কুলা প্রতীকে ৬০৯ ভোট পেয়ে এই ২জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন।
স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) পদে নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আশা মনি। এর আগে আসনটিতে আর কোনো নারী এ পদে নির্বাচন করেননি।
অবিবাহিত আশা মনি জেলার রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের গন্ডগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বাবা আনারুল ইসলাম পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।
আশা মনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্টে অনার্স পড়ছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ২৭ বছর। সেই হিসাবে তিনি সারা দেশের মধ্যে কনিষ্ঠ সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী।
তিনি বলেন, ‘নারী নেতৃত্ব তৈরি করার নিমিত্তে এবং শুধু টাকাওয়ালা আর ব্যবসায়ীরা বাদেও দরিদ্র পরিবার থেকেও নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব।’ তা প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন বলে জানান।
আশা মনি বলেন, ২০২২ সালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। সেখানে সন্তোষজনক ভোটে পরাজিত হন। এবার তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন।
ঠাকুরগাঁও-৩ (রানীশংকৈল–পীরগঞ্জ) দুটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়নয় নিয়ে গঠিত সংসদীয় এলাকা। মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৫৪।
এসব প্রার্থীর জামানত হারানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাধারণ ভোটাররা জানান, নতুন মানুষ ও নতুন দল সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। ঠিকমতো এ প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ও পরিচয় না থাকায় এমন ভরাডুবি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।