দেশের বিভিন্ন হাটবাজার, দোকানপাট থেকে হাত পেতে পাঁচ টাকা, ১০ টাকা করে নেন হিজড়ারা (তৃতীয় লিঙ্গ)। এ টাকা দিয়েই চলে তাদের জীবন-জীবিকা। সমাজে অবহেলিত, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তৃতীয় লিঙ্গের এসব মানুষ এবার বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন।

এক টাকা, দুই টাকা নয়-ব্যবসায়ীদের সহায়তা হিসাবে তারা দিয়েছেন ২২ লাখ টাকা। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে এক কোটি টাকা সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন এ ঘোষণা দেন। এ সময় সংগঠনের সহ-সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

রোববার দুপুরে কয়েকশ হিজড়া বঙ্গবাজারে উপস্থিত হয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে সহায়তার ২০ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। এর আগে সকালে একজন হিজড়া গুরুমা তার হজের টাকা থেকে ২ লাখ টাকা সহায়তা হিসাবে দিয়েছেন। হিজড়া সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হিজড়া উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশ্মির দিপালী হিজড়া বলেন, বহু বছর ধরে আমরা বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। আজ তারা বিপদে পড়েছেন। তাই আমরা চিন্তা করেছি, এবার ঈদের কেনাকাটা না করে, সেই অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দেব। এই লক্ষ্যে আমরা সারা দেশের হিজড়ারা একত্রিত হয়ে ২০ লাখ টাকা তুলেছি। সেই টাকা আজ এখানে তাদের (ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী) হাতে তুলে দিয়েছি। ব্যবসায়ীরা বেঁচে থাকলে আমরাও বেঁচে থাকব।

হিজড়া গুরুমা রাখি শেখ বলেন, আমরা মানুষের কাছ থেকে এক-দুই টাকা করে তুলে এই টাকা জমিয়েছি। এখন আমরা টাকাগুলো মানবতার কল্যাণেই দিয়ে দেব। এই টাকা কোনো ব্যবসায়ীর হাতে দেওয়া হয়নি। পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে হাতে এ টাকা পৌঁছে যাবে। এ সহায়তার চেক হস্তান্তরকালে ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার গুরুমাদের শতাধিক হিজড়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রোববার সকালে উত্তরার হিজড়াদের গুরুমা আলেয়া হিজড়া হজের জন্য জমানো টাকা থেকে ২ লাখ টাকা বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের অনুদান হিসাবে দেন। তিনি জানান, বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দুর্দশা দেখে এবার হজ না করে, সেই ২ লাখ টাকা অনুদান হিসাবে ব্যবসায়ীদের দিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, আজ হাতে পাওয়া টাকার মধ্যে সবচেয়ে আনন্দদায়ক হলো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা আমাদেরকে ২২ লাখ টাকা দিয়েছেন। এটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে মানবতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। আমরা ব্যবসায়ী ভাইদের অনুরোধ করব, তাদের যেন কখনো অবহেলার চোখে না দেখেন। এখন থেকে আমরা হিজড়া জনগোষ্ঠীকে শ্রদ্ধার চোখে দেখব।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মর্মান্তিক, দুঃখজনক। রমজান মাস চলছে, সামনে ঈদ। এ মাসে পণ্যের বড় একটা অংশ ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে থাকেন। এ অগ্নিকাণ্ড তাদের চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বহুতল মার্কেট নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটার একটা স্থায়ী সমাধান হওয়া উচিত। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতি মিলে স্থায়ী সমাধান করতে পারে। এটাই উপযুক্ত সময়। প্রয়োজনে এফবিসিসিআই সব ধরনের সহায়তা দিতে রাজি।

ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ব্যবসায়ীদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপকতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষজন জানতে পেরেছে। অনেকে সাধ্যমতো ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আপনারা (ব্যবসায়ীরা) মনোবল হারাবেন না। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের পাশে আছে। আপনারা ঘুরে দাঁড়াবেন, এটা সময়ের ব্যাপার। দেশের সব ব্যবসায়ীর উচিত, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো। ব্যবসায়ীদের পাশে ব্যবসায়ীরা দাঁড়ালে সমস্যা থাকবে না।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনার জন্য ডিসিসিআই বেশকিছু সুপারিশ করেছে।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে-ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত বা স্বল্প সুদে বিশেষ মেয়াদি ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা প্রদান, ইতোমধ্যে যারা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের মেয়াদি, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ও ক্যাশ ক্রেডিট ঋণ গ্রহণ করেছেন তাদের ঋণের সুদহার কমানোসহ ক্ষেত্রবিশেষে ঋণের ধরনের ওপর ভিত্তি করে কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা এবং সে পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণকে খেলাপি হিসাবে ঘোষণা না করা।

পাশাপাশি সরকারের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় আর্থিক ক্ষতি নিরূপণপূর্বক সহজ শর্তে প্রদত্ত ঋণসমূহের আওতায় নিয়ে আসা। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিসিসিআই জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সুপারিশগুলো বিবেচনা করলে ব্যবসায়ীদের দ্রুত পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জীবনাযাত্রাও স্বাভাবিক হবে।

একদিনের বেতন দিল ভোক্তা অধিদপ্তর : বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের অনুদান এবং অধিদপ্তরের ইফতার আয়োজন বাতিল করে দুই লাখ টাকা সহযোগিতায় দেওয়া হয়েছে।

রোববার বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির কাছে ওই দুই লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। এ সময় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন

বলেন, আজ হাতে পাওয়া টাকার মধ্যে সবচেয়ে আনন্দদায়ক হলো তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা আমাদেরকে ২২ লাখ টাকা দিয়েছেন। এটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে মানবতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। আমরা ব্যবসায়ী ভাইদের অনুরোধ করব, তাদের যেন কখনো অবহেলার চোখে না দেখেন। এখন থেকে আমরা হিজড়া জনগোষ্ঠীকে শ্রদ্ধার চোখে দেখব।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মর্মান্তিক, দুঃখজনক। রমজান মাস চলছে, সামনে ঈদ। এ মাসে পণ্যের বড় একটা অংশ ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে থাকেন। এ অগ্নিকাণ্ড তাদের চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বহুতল মার্কেট নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটার একটা স্থায়ী সমাধান হওয়া উচিত। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতি মিলে স্থায়ী সমাধান করতে পারে। এটাই উপযুক্ত সময়। প্রয়োজনে এফবিসিসিআই সব ধরনের সহায়তা দিতে রাজি।

ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ব্যবসায়ীদের দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপকতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষজন জানতে পেরেছে। অনেকে সাধ্যমতো ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আপনারা (ব্যবসায়ীরা) মনোবল হারাবেন না। বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের পাশে আছে। আপনারা ঘুরে দাঁড়াবেন, এটা সময়ের ব্যাপার। দেশের সব ব্যবসায়ীর উচিত, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো। ব্যবসায়ীদের পাশে ব্যবসায়ীরা দাঁড়ালে সমস্যা থাকবে না।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনার জন্য ডিসিসিআই বেশকিছু সুপারিশ করেছে।

সুপারিশের মধ্যে রয়েছে-ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সুদমুক্ত বা স্বল্প সুদে বিশেষ মেয়াদি ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা প্রদান, ইতোমধ্যে যারা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ধরনের মেয়াদি, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ও ক্যাশ ক্রেডিট ঋণ গ্রহণ করেছেন তাদের ঋণের সুদহার কমানোসহ ক্ষেত্রবিশেষে ঋণের ধরনের ওপর ভিত্তি করে কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা এবং সে পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণকে খেলাপি হিসাবে ঘোষণা না করা।

পাশাপাশি সরকারের পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় আর্থিক ক্ষতি নিরূপণপূর্বক সহজ শর্তে প্রদত্ত ঋণসমূহের আওতায় নিয়ে আসা। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিসিসিআই জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সুপারিশগুলো বিবেচনা করলে ব্যবসায়ীদের দ্রুত পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জীবনাযাত্রাও স্বাভাবিক হবে।

একদিনের বেতন দিল ভোক্তা অধিদপ্তর : বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের অনুদান এবং অধিদপ্তরের ইফতার আয়োজন বাতিল করে দুই লাখ টাকা সহযোগিতায় দেওয়া হয়েছে।

রোববার বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির কাছে ওই দুই লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। এ সময় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, এফবিসিসিআই’র প্রতিনিধি এবং বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আমাদের ক্ষুদ্র এ প্রয়াস।