মিরু হাসান বাপ্পী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় রোপা আমন ধানের অল্প কিছু জমিতে মাজরা পোকার আক্রমন দেখা দিলে উপজেলা কৃষি অফিসে পোকা দমনে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ধানের শীষ বের হবার আগে কিংবা শীষ বের হবার পরে কারেন্ট পোকা হিসেবে পরিচিত এ পোকার আক্রমণে ধানের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে না বলে কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। কারেন্ট পোকার আক্রমণ থেকে রোপা আমন ধান রক্ষা করতে কি কি নিয়ম পালন করতে হবে সেই বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়েছে।

আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন মিলে এবার ১২ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ফসল রক্ষায় কৃষকদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে নিয়মিত আলোক ফাঁদ, দলীয় সভা ও প্রচারপত্র বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত রোপা আমন ক্ষেতে তেমন কোন রোগ বালাই ও পোকা মাকরের আক্রমন নেই বললেই চলে। ফলে কৃষকরা কাঙ্কিত ফসলের চেয়ে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সান্তাহার ইউনিয়নের সান্দিড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই সিদ্দিক বলেন, আমাদের রক্তদহ বিল এলাকায় আগাম জাতের রোপা আমন ধানে পাকতে শুরু করেছে।

এছাড়া বেশির ভাগ জমিতে শীষ বের হচ্ছে। রোপা আমন ধানে বাদামী গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকা সামান্য লক্ষ্য করা গেছে। তবে কৃষি বিভাগের লোকজনের যথাযর্থ উদ্যোগ কারনে পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষা পেয়েছে। আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের করজবাড়ি গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শে গতবারের চেয়ে এবার রোপা আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। অল্প কিছু দিন পরই ধান কাটা শুরু করা যাবে। এখন পর্যন্ত ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। এ বছর সার ও বীজের কোনো সংকট দেখা দেয়নি। যার কারণে ফসলের চেহারাও অনেক সুন্দর হয়েছে। আদমদীঘি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ধান, চালের দাম বৃদ্ধির কারনে শস্য ভান্ডার বলে খ্যাত আদমদীঘি উপজেলার কৃষকেরা নিজ আগ্রহে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন।

উপজেলার মুরইল ও নশরতপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খাদেমুল মাসুদ বলেন, মাঠ পর্যায়ের চাষিদের কাছ থেকে ধানে পোকার আক্রমণের খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে পোকা দমনে কয়েকটি এলাকার ধান ক্ষেত পরিদর্শন করে ওই এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং প্রচারপত্র বিতরন করেছি। কৃষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে যে সব জমিতে পোকা লেগেছিল তা ওষুধ প্রয়োগ করে আক্রান্ত জমি পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে।

আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সময় মত পরামর্শ দেয়ায় রোপা আমন ক্ষেতে সামান্য পোকার আক্রমন দেখা দিলেও ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া আমন ক্ষেতের পোকা দমনে পাচিং পদ্ধতিতেই কারনে ক্ষতিকর পোকার আক্রমন থেকে রোপা আমন ক্ষেত রক্ষায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকেরা ব্যাপক সুফল পেয়েছে। ফলে এবারও ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।