দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের দক্ষিণ আমনগর গ্রামের একরামুল হক তার ছেলের মোবাইলে ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষের জন্য উৎসাহিত হন।

এরপর তিনি তার ছেলেকে সাথে নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো এ তরমুজ চাষ করেন। এতে তিনি সফল হয়েছেন।


স্থানীয়রা জানান, একরামুলের ছেলে শাওন (২১) ইউটিউব দেখে উৎসাহিত হয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করেন। প্রথমবারের চাষেই ভালো ফলন হয়েছে। হলুদ তরমুজ দেখতে এলাকাবাসী তার ক্ষেতে ছুটে আসছেন।

অনেকেই আগামীতে এ তরমুজ চাষ করার আগ্রহও প্রকাশ করে একরামুলের কাছে থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। নতুন এই জাতের তরমুজ দেখতে সুন্দর, আবার স্বাদ ও সুগন্ধিও রয়েছে। একারণে এই তরমুজের চাহিদাও বেশ ভালো।

পার্শ্ববর্তী ছাতিয়ানগড় গ্রাম হতে হলুদ এই তরমুজ দেখতে আশা আনিছুর রহমান নামের এক যুবক বলেন, ফলটি ভিন্ন কালারের হওয়ায় দেখতে আকর্ষণীয়। স্বাদে মনে হয় খুবই মিষ্টি হবে। দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে।

দৈনিক পুনরুত্থান পত্রিকার প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে তরমুজ চাষি একরামুল বলেন, আমার ছেলে শাওন ইউটিউবে প্রথম এই হলুদ তরমুজ এর ভিডিও দেখে উৎসাহিত হয়ে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করি।
ইউটিউবে এই তরমুজের ফলন দেখে খুব ইচ্ছে হলো। তাই চিন্তা করলাম একবার পরীক্ষা করেই দেখি। এরপর সাহস করে ছেলের পরামর্শে তার বন্ধুর মাধ্যমে বগুড়া হতে বীজ ক্রয় করি।

৪০ শতাংশ জমিতে বীজ বপন করি। ফলনও ভালো হয়। এই তরমুজ চাষ করতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা। আর এই ফল থেকে আয় হবে ১ লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ টাকা বলে আমরা আশাবাদী। এই তরমুজ চাষে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। মাত্র ৩ মাস সময় সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ১ বিঘা জমিতে ৪ লাখ টাকার তরমুজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতেও এই তরমুজ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

একরামুল হক আরও বলেন, আমার ছেলে নতুন জাতের এই হলুদ তরমুজ চাষ করে এলাকাবাসীর মধ্যে সাড়া ফেলেছেন। হলুদ রঙের তরমুজ আছে বলে সাধারণ মানুষ জানতো না। এই তরমুজ ভেতরে লাল, রসালো আর খেতে খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু।

খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় বলেন, নতুন ধরনের এই তরমুজ এলাকার কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। হলুদ তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল। এটি হাইব্রিড জাতীয় তরমুজ। তবে উৎপাদন ব্যবস্থা দেশি তরমুজের মতো।একরামুল হকের এই সফলতার পেছনে উপজেলা কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে।