দিনাজপুরের খানসামায় থাই থ্রি পেয়ারার বাগান করে সফল উদ্যোক্তা ইফতি রহমান। উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কুমড়িয়া গ্রামে ১০ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন মিষ্টি ও সুস্বাদু থাই থ্রি পেয়ারা,মাল্টা ও কমলার বাগান।
জানা যায়, ছাত্রজীবন থেকে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত ইফতি রহমান। পড়াশুনার পাশাপাশি কিশোর থেকেই তিনি বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষ করেন। প্রায় ৪ বছর আগে অন্যের কিছু জমি ইজারা নিয়ে বন্ধুদের সাথে শেয়ারে প্রথমে শুরু করেন থাই থ্রি পেয়ারার চাষ। সে সময়ে তিনি কঠিন লোকসানের মুখে পড়ে। পরবর্তীতে প্রায় গত ৩ বছর আগে ২০১৮ সালে আবারও নিজেই অন্যের ১০ একর জমি ইজারা নিয়ে থাই থ্রি পেয়ারার বাগান শুরু করেন। বর্তমানে থাই থ্রি পেয়ারা লাভজনক হওয়ায় জমির পরিমাণ বাড়তে থাকে। এখন ১০ একর জমির উপর পাঁচটি বাগান রয়েছে তার। প্রথম দিকে জমি ইজারা টাকার পরিমাণ কম থাকলেও বর্তমানে প্রতিবছর ২০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে ইজারা নেয়া হয়েছে।
বাগানের মালিক ইফতি রহমান বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকেই কৃষিতে সম্পৃক্ত। নিজের তেমন জমিজমা নাই। অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করা হয়। ২০০৮-২০০৯ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অর্নাস-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিকেল এ জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। তার পরে সেখানে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে কৃষির ওপর লেগে আছি। আলহামদুলিল্লাহ..এখন আমি একজন সফল উদ্যোক্তা। আর এ কাজে আমাকে সার্বিক সহযোগীতা করছেন আমার বাবা মোঃ ইয়াকুব আলী।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে এসব থাই থ্রি পেয়ারার চারা নাটোর জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি চারা খরচ পড়েছিল ৩০-৪০ টাকা।প্রথম বছর প্রতি বিঘাতে খরচ পড়ে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা। গাছ বড় হওয়ার পর দ্বিতীয় বছর খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। পেয়ারা লাগানোর ৬ মাস পর থেকে গাছে পেয়ারা আসা শুরু করে। গাছে যখন পেয়ারা আসা শুরু করে তখন অল্প পরিমাণ উঠে। এসব পেয়ারা পাইকাররা এসে জমি থেকে কিনে নিয়ে যান। দিনাজপুর সহ কয়েকটি জেলায় এগুলো সরবরাহ করা হবে। বাগানে প্রতিদিন প্রায় ১৩-১৫ জন শ্রমিক কাজ করে।
বাগানে কাজ করা নিয়মিত শ্রমিক আবু তালেব,হামীম ও মোরশেদুল সহ কয়েকজন বলেন, গত তিন বছর থেকে তারা বাগানে নিয়মিত ১৩-১৫ জন কাজ করছেন। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ টা পর্যন্ত কাজ করে মুজুরি পান ৩৮০ টাকা। পেয়ারা বাগানে তারা সারাবছরই কাজ করতে পারেন। বাগানের ঘাস নিড়ানো থেকে শুরু করে পানি,সার ও সেচ দেয়াসহ বিভিন্ন পরিচর্চা ও বাগান থেকে পেয়ারা উঠিয়ে প্যাকেটজাত করাই তাদের কাজ।
এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় বলেন, কাচীনিয়ার পেয়ারা চাষী ইফতি রহমানের পেয়ারা বাগানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। তিনি সেদিক দিয়ে বেশ সফল। বিভিন্ন সময়ে তিনি পরামর্শ নিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে তাকে কারিগরি সহযোগীতা করা হচ্ছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।