রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ২৬ দিন কারাবাসের পর চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন মঞ্জুরের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিনের আদেশ দেন। পরীমনির পক্ষে অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান জামিন শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন,‘পরীমনিকে তিন দফায় ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডের আগে ২৪ ঘণ্টার বেশি তাকে পুলিশ কাস্টডিতে রাখা হয়। রিমান্ডের নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্ত কর্মকর্তা সাদামাটা প্রতিবেদন দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মাদকের যে অভিযোগ আনা হয়েছে এর কোন প্রমাণাদি নেই। আসামি শারীরিকভাবে অসুস্থ, রক্তশূন্যতা আছে। রিমান্ডে থাকায় তার অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।’ তিনি বলেন,‘পরীমনি জেলে থাকায় তার সাথে চুক্তি করা অনেক সিনেমা আটকে আছে। বিশেষ করে প্রীতিলতা সিনেমাটি। আসামি ২৬ দিন কাস্টডিতে, জেলে আছেন। মামলার অবস্থা বিবেচনায় তিনি জামিন পেতে পারেন।’ মজিবুর রহমান বলেন,‘পরীমনি চিত্রনায়িকা। তার পরিচিতি আছে। জামিন দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। তদন্তে বিঘ্ন ঘটাবেন না এটা আদালতকে নিশ্চিত করতে পারি। আর তার বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা হয়েছে সেটা প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা হতে পারে। যে কোনো শর্তে তাকে জামিন দেন। তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হলে আমরা ট্রায়াল ফেস করবো।’ রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন,‘গত ৪ আগস্ট র্যাব তার বাসায় অভিযানে যায়। তার বাসার সামনে র্যাব এ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু তিনি দরজা খোলেনি। পরে দরজা খুললে র্যাব ভিতরে প্রবেশ করে। বাসায় মদের বোতল পাওয়া যায়।’ তিনি বলেন,‘তার বাসা থেকে ১৮.৫ লিটার মদ পাওয়া গেছে। এছাড়া আরও অনেক খালি বোতল পাওয়া গেছে। র্যাবকে বাইরে একঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে তারা মদের বোতলগুলো খালি করে। এছাড়া তার বাসা থেকে এলএসডি, মাদক আইস পাওয়া যায়। মাদক যুব সমাজকে ধ্বংস করে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। পরীমনি মদের আসর বসিয়ে মাদক সেবন করতেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন,‘অনেক মাদক মামলা মামলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন কারাবাসের পরও জামিন হচ্ছে না। আইন সবার জন্য সমান। পরীমনির বাসা থেকে ভয়াবহ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। তাই তার জামিনের বিরোধিতা করছি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে অসুস্থ, নারী, অভিনেত্রী, মাদকের মূল্য বিবেচনায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত আদালত পরীমনির জামিনের আদেশ দেন। উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকেলে বনানীর ১২ নম্বর সড়কে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। মাদকের মামলায় পরীমনির ৫ আগস্ট চার দিন এবং ১০ আগস্ট দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ১৩ আগস্ট রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর আবারও ১৯ আগস্ট এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ২১ আগস্ট আবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।