যশোর প্রতিনিধি: যশোরে পৃথক দুইটি চেক ডিজঅনার মামলায় বহুল আলোচিত ই-ভ্যালি ডট কম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রাসেল, তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও সিনিয়র ম্যানেজার(ফিন্যান্স) মাসুদকে কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার যুগ্ম দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মোঃ খাইরুল ইসলাম এ আদেশ প্রদান করেন। এআদেশে বলাহয় প্রত্যেকের চারমাসকরে বিনাশ্রম কারাদন্ড ও দুইটি চেকে উল্লেখিত তিনলাখ ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এপিপি মিজানুর রহমান মিন্টু। আসামিরা পলাতক থাকায় রায় ঘোষনার পর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল শহরের ষষ্টিতলাপাড়ার ইমান আলীর ছেলে সামছুজ্জামান বাদী হয়ে রাসেল ও মাসুদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ই-ভ্যালি চটকদারী বিজ্ঞাপন দিয়ে তাকে আকৃষ্ট করে। এক পর্যায় বাদী ২০২১ সালের ৫ মার্চ একটি এ্যাপাচী আরটিআর মোটসাইকেলের অর্ডার করেন। এজন্য একলাখ ৭০ হাজার টাকা পেমেন্ট করেন। ওই মোটরসাইকেল ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দেয়ার কথা থাকলেও মোটরসাইকেল দিতে ব্যর্থ হয় ই-ভ্যালি। ২০২১ সালের ৩ মার্চ কোম্পানির পক্ষথেকে যৌথ সাক্ষরে সিটি ব্যাংক লিমিটেডের একটি চেক দেয়া হয়। যা যেকোনো সময় নগদায়ন হওয়ার কথা থাকলেও ওই চেক ডিজঅনার হয়। বাধ্য হয়ে বাদী আদালতে এ মামলা করেন। এ মামলায় আসামিদের প্রত্যেকের চারমাস করে সশ্রম কারাদন্ড ও চেকে উল্লেখিত একলাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার আদেশ দেন। ওই টাকা দুইজনকে সমানভাগে দিতে হবে।
অন্যদিকে, পৃথক আরেকটি মামলায় ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের চারমাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও চেকে উল্লেখিত একলাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২২ মার্চ সামসুজ্জামান আদালতে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। ওই মামলায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে আসামি করা হয়।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারী আরো একটি এ্যাপাচি মোটরসাইকেলের অর্ডার দেন। একই সাথে অগ্রীম একলাখ ৭০ হাজার টাকা পেমেন্ট করেন। এ মোটরসাইকেলটিও ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হয় ই-ভ্যালি। তার প্রেক্ষিতে একইভাবে সিটি ব্যাংকের একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু তা ডিজঅনার হয়। বাধ্য হয়ে তিনি মামলা করেন।
উল্লেখ্য, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি সারাদেশে বিভিন্ন ধরণের পণ্যের উপর চোখধাধানো ছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে। তারা পণ্য ডেলিভারি দেয়ার আগেই অগ্রিম টাকা নেন। শেষমেষ গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়েই প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে যায়। এরপর যশোর আদালতে ই-ভ্যালীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। সেসব মামলার অধিকাংশই বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে ই-ভ্যালির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা।