সংসদ ভবনে খোলা তলোয়ার নিয়ে হামলার পরিকল্পনায় অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মুফতি আমির হামজার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এছাড়া আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য আব্দুল্লাহ ও আনোয়ার হোসেনের ৪ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম এই আদেশ দেন। এরআগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-এর পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি নিষিদ্ধে ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য মো. আল সাকিবসহ অন্য কর্মীদের তার বক্তৃতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। এই হামলা করার বিষয়ে ইন্ধন দিয়েছেন। আমির হামজার কথিস উগ্রবাদী বক্তব্য ইউটিউবে দেখে আগেই গ্রেপ্তার আল সাকিব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করে গুলিশের গুলিতে শহীদ হবেন মর্মে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, যা তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে।
আমির হামজা তথাকথিত জিহাদের নামে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখা করে উগ্রবাদী বয়ান দেন। যুব সমাজকে উগ্রবাদ সমর্থনে ইন্ধন দেন। এছাড়া বয়ানের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে উগ্রবাদের প্রচার ও প্রসারে লিপ্ত রয়েছেন। এছাড়া আব্দুল্লাহ ও আনোয়ার হোসেন জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আমির হামজার পক্ষে অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম আকন্দ, শাকিল উদ্দিন, এমআর মাসুদসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। তবে অন্য দুই আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন। উল্লেখ্য, গত ৫ মে তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টারত সাকিব নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাকিবকে আটকের পর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় সাকিবসহ আলী হাসান উসামা ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবীকে আসামি করা হয়। সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, সাকিবের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘সাকিব মোবাইল ফোনে উগ্রবাদ বার্তা সংবলিত ভিডিও প্রচারকারী আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুন ইজহার প্রমুখ ব্যক্তির উগ্রবাদী জিহাদি হামলার বার্তা সংবলিত ভিডিও দেখে উগ্রবাদে আসক্ত হয়।’ ওই এজাহারে মুফতি আমির হামজার নাম ছিল। তার সূত্রে ধরেই সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া থেকে আমির হামজাকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। এদিকে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আলী হাসান ওসামা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আর নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য আল আমিন রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছে। মুফতি আমির হামজা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের রিয়াজ সর্দারের ছেলে।
তিনি বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসীর পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।