কোনো সাংবাদিক তার নিউজের তথ্যের সোর্স কারো কাছে প্রকাশ করতে বাধ্য নয় বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দেন।
রাষ্ট্র বনাম দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের স্বাক্ষরের পর ৫১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, এই মামলার শুনানি পর্যালোচনা করে এটাই প্রতীয়মান যে কোনও সাংবাদিক তার নিউজের তথ্যের সোর্স কারও কাছে প্রকাশ করতে বাধ্য নয়। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে দেওয়া আছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, এটা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সার্বিক দিক বিবেচনায় আমাদের মতামত হলো, সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকরা সাংবিধানিকভাবে এবং আইনত দুর্নীতি এবং দুর্নীতিকারীদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে সংবাদ পরিবেশন করতে পারবেন। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য বলে উল্লেখ করেন আদালত। পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, ‘আধুনিক বিশ্বে জানার অধিকার সবারই আছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো জনগণকে সজাগ করা। বর্তমান সময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ছে। আর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’ তবে ‘হলুদ সাংবাদিকতা গ্রহণযোগ্য ও সমর্থনযোগ্য নয়’ বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
আদালত তার রায়ে বলেন, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে গণমাধ্যমের মনোযোগী হওয়া উচিত। জনস্বার্থে দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশে আইন সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিয়েছে।
আদালত আশা প্রকাশ করে বলেন, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে গণমাধ্যমকে মনোযোগী হতে হবে। দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও জনস্বার্থ আছে— এ ধরনের সব সংবাদ সাংবিধানিকভাবে ও আইনগতভাবে সাংবাদিকরা তুলে ধরতে পারেন। সাংবাদিকদের সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে তাতে সাংবাদিকরা তাদের নিউজের তথ্যের সোর্স প্রকাশ করতে বাধ্য নন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।