জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত আবার পর্যালোচনা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রবিবার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ও রাশেদা সুলতানা আলাদাভাবে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ করা নিজেদের কর্মপরিকল্পনায় ইসি বলেছে, সংলাপে অংশগ্রহণকারী ২৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১৭টি দল ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে। বিপক্ষে মত দিয়েছে ১২টি দল। বেশির ভাগ দলের মত ইভিএমের পক্ষে থাকায় ইভিএম ব্যবহার না করা যুক্তিসংগত হবে না বলে কমিশন মনে করে।

কিন্তু সংলাপে দেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত প্রস্তাব পর্যালোচনা এবং দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ইসি যে ১৭টি দলকে ইভিএমের পক্ষে বলে প্রচার করেছে, তার মধ্যে ৩টি দল সরাসরি ইভিএমের বিপক্ষে। একটি দলের ইভিএম নিয়ে কোনো মতামত ছিল না। আর ৯টি দল ইভিএম নিয়ে বিভিন্ন শর্তের কথা বলেছিল। সরাসরি ইভিএমের পক্ষে অবস্থান ছিল মাত্র চারটি দলের।

এ বিষয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে মতামত দিয়েছিল, তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিছু দল লিখিত যে প্রস্তাব দিয়েছে, আলোচনার পর মতামত বদলেছে।

কিন্তু তিনটি দল বলেছে, তারা লিখিত এবং মৌখিকভাবে বলেছিল, তারা ইভিএমের বিপক্ষে। কিন্তু ইসি তাদের পক্ষে দেখিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, ‘হয়তো তারা (ওই তিনটি দল) লিখিত দিয়েছিল বিপক্ষে। কিন্তু আলোচনার পর তারা যেভাবে কথা বলেছে, সেটা পক্ষে এসেছে। হয়তো এখন তারা আবার বিপক্ষে বলতে পারে, সেটা তো তাদের অধিকার আছে।’

মো. আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে মতামত দিয়েছিল, তার ডকুমেন্ট (অডিও–ভিডিও রেকর্ড) আছে। সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এগুলো ইসির ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা, ৯০০টি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরেক নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, তাঁরা মনে করছেন তাঁরা যেটা করেছেন তা ঠিক আছে। রাজনৈতিক দল অনেক কথা বলছে। ইসি যাচাই–বাছাই করে দেখবে। যদি ভুল ধরা পড়ে, ভুল তো ভুলই।

ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রসঙ্গে রাশেদা সুলতানা বলেন, ইভিএমে সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব এটা বোঝার পর ইসি কেন সে যন্ত্র নেবে না? অন্য অনেক দেশের ইভিএমের সঙ্গে এই ইভিএমের মিল নেই। এখানে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের ব্যবস্থা আছে। ইসিকেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কে ইভিএম চাইল, কে চাইল না, সেটা কি বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার? ইসির কি এতটুকু স্বাধীনতা নেই?’

কলমকথা/এমএনহাসান