অনিয়মের কারণে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে।

গত ১২ অক্টোবর এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণে যেসব প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্বে ছিলেন, আজ তাঁদের বদলে ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ১৪৫ জন নতুন প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা সবাই প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা এবং তাঁদের আনা হয়েছে পাশের পাঁচটি উপজেলা থেকে।
পোলিং অফিসার থাকছেন স্থানীয়রাই। তবে এ ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার (ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা) মো. ফরিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
সবগুলো ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা থাকছে। এ জন্য মোট এক হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকায় নির্বাচন ভবন থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোটগ্রহণ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

গত ২৩ জুলাই জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়।
গত ১২ অক্টোবর এই আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের মাঝপথে নির্বাচন বন্ধ করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট চলাকালে সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে ৫১টি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম দেখতে পেয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পরে অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ৫১টি ভোটকেন্দ্রের ঘটনা তদন্ত করে গত ২৭ অক্টোবর ইসিকে প্রতিবেদন দেয়। পরে গাইবান্ধা-৫ আসনের বাকি ৯৪টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম ছিল কি না, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় ইসি।

১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন আগের রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম, একজন এডিসি, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের পাঁচজন এসআইসহ মোট ১৩৪ জন কর্মকর্তাকে অনিয়মের জন্য চিহ্নিত করে শাস্তির সুপারিশ করে।

এই নির্বাচনে আগের প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তাঁরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, স্বতন্ত্র নাহিদুজ্জামান নিশান, বিকল্পধারার মো. জাহাঙ্গীর আলম ও স্বতন্ত্র সৈয়দ মো. মাহবুবুর রহমান। এর মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে ভোটযুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন নাহিদুজ্জামান।

সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলা নিয়ে গাইবান্ধা-৫ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৭০ হাজার ১৬০ ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন। ভোটকেন্দ্র ১৪৫টি এবং ভোটকক্ষ ৯৫২টি।

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ২১ জন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ র‍্যাবের আটটি টিম, পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশ, আনসার মোতায়েন থাকছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকেও নতুন করে সাজানো হয়েছে। ইভিএমের ব্যাপারে সার্বক্ষণিক নজর রাখতে কারিগরি টিমের সদস্যরা কেন্দ্রে আছেন। চরাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।