তৈয়বুর রহমান কিশোর,বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা-মধুখালি উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-১ সংসদীয় আসন গঠিত। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের কিছু প্রার্থীকে মাঠে দেখা গেলেও দেখা মিলছে না বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের।
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে কিছু সংখক নেতাদের মানুষের কাছে গিয়ে দোয়া চাওয়া ও পথসভা করতে দেখা যাচ্ছে। মানুষের কাছে গিয়ে দোয়া চাওয়ার কারনে নির্বাচনী মাঠ গরম হয়ে উঠছে ইতিমধ্যে।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা যার যার মতো করে নির্বাচনী প্রচারাভিযান অব্যাহত রেখেছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কর্মী ও নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছেন।ফরিদপুরের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর-১ আসনে নৌকার পক্ষে প্রথম দিকে এক ডজনেরও বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা গেলেও পরবর্তীতে অনেকেই মাঠে দেখা যায়নি।। মনোনয়ন প্রত্যাশিদের অনেকেই বিগত দিনে এলাকায় ছিলেন না। আবার দুই একজনকে নিয়মিত এলাকায় দেখা গেলেও কয়েকজনকে মাঝে মাঝে এলাকায় দেখা গেছে।যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সাংসদ বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান, এই আসনের বর্তমান এমপি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মনজুর হোসেন, ফরিদপুর-১ আসনের পদত্যাগী এমপি আব্দুর রউফ মাস্টারের ছেলে, বাংলাদেশ আ’লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও সাবেক সাংসদ কাজী সিরাজুল ইসলাম, সাবেক এআইজি ও বাংলাদেশ পাঠাগাড় আন্দোলনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মালিক খসরু পিপিএম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট লিয়াকত শিকদার, বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ শামীম রেজা, মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন। এ সকল মনোনয়ন প্রত্যাশিরা সকলেই মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকা প্রতিকে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে আব্দুর রহমানকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ঈদ, পূজাসহ সব ধরণের অনুষ্ঠানে দেখা গেছে বিগত দিনগুলোতে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন ছাত্রলীগের সম্পাদক থাকা কালিন ২০০৭ সালে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে গ্রেপ্তার হন এবং দীর্ঘদিন জেল খাটেন। মামলাটি পরবর্তীতে রাজনৈকি বিবেচনায় নিষ্পত্তি হয়। আব্দুল্লাহ আল মামুন এক আসনের সব শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে একটি পরিচিত মুখ। তার চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা ৪ জন। তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ শাহ মো. আবু জাফর, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের-সহ সভাপতি ও সাবেক সাংসদ খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. সাহাবুদ্দিন আহমেদ নিউটন মিয়া এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আজিজুল আকিল ডেভিড সিকদার। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করবেন কামরুজ্জামান মৃধা। এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে শাহাবুদ্দিন আহমেদ নিউটন মিয়াকে করোনাকালিন সময় দেখা গেছে অসহায় দরিদ্রদের বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছায় দিতে। শীত কালিন সময় বিভিন্ন এলাকায় কম্বর বিতরণ করতে এবং নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে। দলের মনোনয়ন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেন, আমি দল করি, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মনোনয়নের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমি সেই সিদ্ধান্তই মাথা পেতে নেবো। এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশে বিষয়ক উপকমিটির সদস্য, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক স্কুল বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার পিতা আব্দুর রউফ মিয়া ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি সারা জীবন এই জনপদের মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। আমি আমার পিতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারন করে আজীবন এই জনপদের মানুষের সেবা করতে চাই। ফরিদপুর-১ আসন তথা বোয়ালমারী -আলফাডাঙ্গা-মধুখালী উপজেলার সাধারন মানুষের জন্য আমার সাধ্যের, সর্বোচ্চ টুকু করতে চাই, শুধু মনোনয়ন কেন্দ্রীক রাজনীতি নয়, লাগাতার সাধারন জনগন সহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষের পাশে আছি, আমৃত্যু থাকবো। জনগনই আমার শক্তি ও প্রাণ। তিনি আরো বলেন, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মনোনয়নের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমি সেই সিদ্ধান্তই মাথা পেতে নেবো। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সাংসদ খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, এই প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি শতভাগ আশাবাদী যে আমি মনোনয়ন পাব। দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহ মো. আবু জাফর সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি (শাহ জাফর) শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ। করোনাকালীন সময়েও দলের নেতাকর্মী তাকে পাশে পায়নি। এ জন্য আমি নিশ্চিত যে দল নির্বাচনে অংশ নিলে আমিই মনোনয়ন পাব।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।