প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের কাছ থেকে পাওয়া ৩ শতাধিক ব্যক্তির মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৫০ জনকে বাছাই করা হয়েছে।
এখন তাদের জীবনবৃত্তান্ত এবং অতীতের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা হবে। এ নিয়ে আগামী শনিবার সকালে ফের বৈঠকে বসবে সার্চ কমিটি।বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির চতুর্থ বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানায়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বৈঠকে খসড়া তালিকার প্রতিটি নাম ধরে ধরে আলোচনা করেন কমিটির সদস্যরা।
বুধবারের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সার্চ কমিটির প্রধান আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সার্চ কমিটির সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হুসাইন, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সংক্ষিপ্ত তালিকার উল্লেখিত ব্যক্তিদের জীবনবৃত্তান্ত পর্যালোচনা এবং যাদের জীবনবৃত্তান্ত নেই তাদের কাছ থেকে সেটি সংগ্রহ করা হবে। তবে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য দিতে কেউ সম্মত হননি। বৈঠকে তালিকার বাইরে আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের যোগ্য ও দক্ষ কেউ থাকলে তাদের নাম প্রস্তাব করতেও কমিটির সদস্যদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে চার দফায় বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৪৭ বিশিষ্টজনের সঙ্গে বৈঠক করে সার্চ কমিটি। এ ছাড়া দেশে নিবন্ধিত ৩৯টি দলসহ সাধারণ মানুষকে আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের নামের তালিকা পাঠাতে অনুরোধ করা হয়।
এর ভিত্তিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের কাছ থেকে পাওয়া ৩১৫ জনের নামের তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সার্চ কমিটি। সেখান থেকেই ইসি গঠনের জন্য ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করার কার্যক্রম চলছে। এর আনুষ্ঠানিকতা গতকালের বৈঠকে শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগের জন্য ১০ জনের একটি তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে সার্চ কমিটি।
সার্চ কমিটিতে বুধবার সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব শামসুল আরেফীন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সার্চ কমিটির অনুসন্ধান অব্যাহত আছে এবং আগামী শনিবার সকাল ১১টায় আবার বসবেন। আর কোনো বিষয় আমি বলতে পারব না।
পেশাজীবী ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রস্তাবিত তালিকায় নাম আসা বিশিষ্ট আইনজীবী শাহ্দীন মালিকসহ কয়েকজন তাদের নাম প্রত্যাহারের জন্য সার্চ কমিটিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে শামসুল আরেফীন বলেন, ‘কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন। পরদিন ওই কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যার ধারাবাহিকতায় সার্চ কমিটির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।