প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি জনগণকে পরোয়া করে না। ওরা ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এটা বিএনপির চরিত্র। তার কারণ একটাই, ওরা তো গণমানুষের দল না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। সম্মেলন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির শাসনামলের মহিলাদের ওপর যে অত্যাচার, দুঃশাসন একাত্তরের নির্যাতনের সঙ্গে মিলে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরাই এসবের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। একদিকে পুলিশ বাহিনী অন্যদিকে বিএনপির গুন্ডাবাহিনী অকথ্য নির্যাতন করেছে। এই মেয়েদের ওপর যেভাবে নির্যাতন করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা ক্ষমতায় এসে আমরা প্রতিশোধ নিতে যাইনি। দেশের উন্নয়নের মনোযোগ দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর অধিকার কেড়ে নিয়েছে বিএনপি। শামসুন্নাহার হলেও মেয়েদের ওপর নির্যাতন করেছে। তাদের গোলাগুলিতে বুয়েটে মেধাবী ছাত্রী সনি মারা গেলো।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যুব মহিলা লীগের অবদান স্মরণ করে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বাবার কাছ থেকে দেশ উন্নয়নের মডেল সবসময় শুনতাম। ’৭৫ এর পর দেশের মানুষের ভাগ্যে নেমে এলো কালো মেঘ। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে এবং বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে কাজ শুরু করে। দেশ যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তখন আবারও বিএনপি ক্ষমতায় এসে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে গেলো। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করল। ’৭৫ থেকে ‘৯৬ পর্যন্ত আর ২০০১ থেকে ২০০৮-এই ২৯ বছর বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে, তাদের ভাগ্যোন্নয়ন হয় তখনই যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কোনো কথা বলেনি। ওই নির্বাচনের ফলাফল কি ছিলো। সেই নির্বাচনে ৩’শ ছিটের (আসন) মধ্যে বিএনপি কয়টা সিট পেয়েছিলো? মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিলো। আর জাতীয় পার্টি পায় ২৭টি সিট। জাতীয় পার্টি যদি আর মাত্র ৩টি ছিট পায় তাহলে ওই সময়ে তারা বিরোধীদলও হতে পারতো না। ২০০৮ সালের নির্বাচরে তো এই রেজাল্ট। ২০১৪ সালে তারা কতো মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে?
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সাক্ষরতার হার বাড়ে আর বিএনপি আসলে কমে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া উর্দু আর অংক এই সাবজেক্টে ছাড়া সব ফেল করেছিলো। উর্দু তার প্রিয় সাবেজক্ট কারণ পাকিস্তান আর অংকতে পাস করেছে কারণ টাকা গোনা। জিয়াউর রহমান ইন্টার পাস আর তারেক যে কি পাস কে জানে। আওয়ামী লীগ যে স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়েছিলো বিএনপি ক্ষমতায় এসে সে তা কমালো। কারণ তারা তো পড়াশোনা করেনি তাহলে অন্যরা করবে কেন, এই হচ্ছে তাদের মনোভাব।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিনা পয়সায় আমরা ভ্যাকসিন দিয়েছি। কেউ গৃহহীন থাকবে না। ৩৫ লাখ মানুষকে ভূমিসহ ঘর দিয়েছি। কমিউনিটি ক্লিনিক খালেদা জিয়া বন্ধ করেছিল সেটি চালু করে ৩০ প্রকার ওষুধ ফ্রি দিচ্ছি। গ্রামের মানুষ নিজে হেটে এসে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে। নারীদের সুরক্ষিত রাখতে একাধিক আইন আমরা করে দিয়েছি। ৯৬ সালের আগে মেয়েদের এতো জাগরণ ছিলো না। আজকে প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের জয়গান। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় এসে নারী জাগরণ ঘটিয়েছে।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে। আমাদের অর্থনীতি হবে ই-ইকোনমি, সেটাও আমরা ডিজিটাল করবো। আমাদের প্রতিটি উন্নয়ন ই-উন্নয়ন করবো।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।