![](https://dailykolomkotha.com/wp-content/uploads/2021/06/kk-gov-e1624858815827.jpg)
করোনা সংক্রমণ বাগে আনতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণ ছুটির কথা চিন্তা করছে সরকার।
সম্প্রতি করোনাসংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশের আগে থেকেই কঠোর বিধি-নিষেধ বা লকডাউনের বিষয়টি নিয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের ভেতরে আলোচনা হচ্ছিল। তবে অর্থবছরের শেষ, জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলা, উত্তরবঙ্গের আম মৌসুমসহ সার্বিক অর্থনীতির কথা চিন্তা করে কঠোর সিদ্ধান্তে যেতে দ্বিধান্বিত ছিল সরকার। এর পরও ঘন বসতির ঢাকাকে বাঁচাতে আশপাশের সাতটি জেলায় লকডাউন দিয়ে সরকার পরীক্ষামূলক সতর্ক অবস্থা নিয়েছিল। সাত জেলার লকডাউন কার্যত কোনো ফল দেয়নি। উল্টো সংক্রমণ ও মৃত্যুসংখ্যা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী শাটডাউনের দিকেই যাচ্ছে সরকার। তবে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে সেটা বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় এগোচ্ছেন নীতি-নির্ধারকরা।
সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলের একাধিক উচ্চপর্যায়ের সূত্রের সঙ্গে কথা বলে সাধারণ ছুটির চিন্তার কথা জানা গেছে। তবে সরকারি প্রজ্ঞাপনে ঠিক ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করা হবে কি না তা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও দেশ চালাতে সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর খোলা রাখতে হয়। এসব জায়গায় নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের সাধারণ ছুটির মধ্যে আলাদা বেতন-ভাতা দিতে হবে। বর্তমানে সরকার কৃচ্ছ তা সাধনের নীতিতে থাকায় সরকারি ঘোষণায় ‘সাধারণ ছুটি’ শব্দটি না-ও থাকতে পারে। তবে কার্যত সাধারণ ছুটির মতোই কড়াকড়ি আরোপ হবে। অর্থাৎ জরুরি প্রয়োজনের সরকারি-বেসরকারি অফিস ছাড়া সব ধরনের অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে যেমন অবস্থা ছিল, তেমনি অবস্থায় না গেলে করোনাভাইরাসের বর্তমান সংক্রমণের উল্লম্ফন ঠেকানো যাবে না। সংক্রমণের চেইন ভাঙতে সাধারণ ছুটিই একমাত্র ভরসা। তবে গতবারের চেয়ে দু-একটি ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকবে। গতবারের সাধারণ ছুটির মধ্যে জরুরি সেবার সরকারি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, হিসাব বিভাগ, ওষুধ, গণমাধ্যম, খাদ্যপণ্য, কাঁচাবাজার, পোল্ট্রি, কৃষি, ব্যাংক ইত্যাদি বিষয়গুলো সংক্রান্ত যান ও ব্যক্তিদের চলাচলে বাধা ছিল না। এবার এগুলোর সঙ্গে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টশিল্প, বন্দর, বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক বিমান, প্রবাসীদের দেশের বাইরে যাওয়া-আসার বিষয়গুলোও লকডাউনের আওতামুক্ত রাখার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের একজন সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাধারণ ছুটির মতোই অবস্থা থাকবে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা হবে কি না তা বলতে পারছি না।’ আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠক শেষে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদসচিব সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রিসভা বৈঠকের বিষয়সংক্রান্ত তথ্য জানাবেন। সেই সময় আগামী বৃহস্পতিবারের কঠোর লকডাউনের বিষয়েও কিছু ইঙ্গিত দিতে পারেন বলে জানা গেছে। কঠোর লকডাউনের কথা গত শনিবার দুপুরে বলেছিলেন সরকারের প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার। আজ সোমবার থেকে সেটা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও এখন সেটা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধান তথ্য অফিসারের ওই ঘোষণার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে সব মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ব্যবসায়ী, সুধীসমাজ, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বড় একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বিভিন্ন খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন বিষয় খোলা রাখার প্রয়োজনীয়তার প্রস্তাব তুলেছিলেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।