এবার নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য প্রস্তাবে চট্টগ্রামের ১১ জনের নাম উঠে এসেছে। উঠে আসা নামের মধ্যে সরকারের সাবেক কর্মকর্তাসহ এই ১১ জন ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বসবাস করছেন। এখানে সাবেক সেনা কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্নজনের নাম রয়েছে। আবার নাম দেখে হতবাকও হয়েছেন কেউ কেউ কীভাবে নিজের নাম উঠে এসেছে ইসির নামের তালিকায় তা নিয়ে। সব মিলিয়ে এসব নাম নিয়ে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

জানা গেছে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিসহ বিভিন্নভাবে ৩২২ জনের নামের প্রস্তাব পেয়েছে সার্চ কমিটি। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে সেই নামগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। কারা এসব ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছেন তা প্রকাশ করা হয়নি। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য যাদের নাম প্রস্তাব হিসেবে গেছে, তাদের মধ্যে অন্তত ১২ জন চট্টগ্রামের সন্তান ও এখানে কর্মরত।

তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল (অব.) হারুনুর রশিদ, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব অপরূপ চৌধুরী, ২০০৬ সালে ভেজালবিরোধী অভিযানের সময় আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট ও পরে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসরে যাওয়া রোকন-উদ-দৌলা, বর্তমান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আবুল হাশেম (চট্টগ্রামের সাবেক জেলা পিপি), বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান,

চট্টগ্রামের সোবহানিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা কাযী মঈনুদ্দিন আশরাফী ও ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন অধ্যাপকের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ ও লোকপ্রশাসন বিভাগের ড. খসরুল আলম কুদ্দুসী। এ ছাড়া রয়েছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ এবং চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বতারা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নামও।

কোথাও কোনো নাম দেননি দাবি করে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বতারা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী , ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। দায়িত্বে আসবেন যোগ্যতাসম্পন্ন অনেকেই। কিন্তু এরই মধ্যে তালিকায় আমার নাম দেখে হতবাক হলাম। কারণ আমি কোনো নাম দিইনি। কীভাবে আমার নামটা এসেছে তাও আমি জানি না। তবে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’

জানা গেছে, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে। স্বাধীনতার পর এবারই আইন অনুযায়ী প্রথম ইসি গঠিত হচ্ছে। এ জন্য ২৭ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল, ২০২২ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর আইন অনুযায়ী ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।

সার্চ কমিটিকে নাম সুপারিশের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ১৫ কার্যদিবস। সেই হিসেবে তাদের হাতে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় আছে। রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায় থেকে আসা প্রস্তাবের বাইরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটি নিজেরাও যোগ্য ব্যক্তি বাছাই করতে পারবে। সব নামের মধ্য থেকে ১০ জনকে বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে সার্চ কমিটি। সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

 

কলমকথা/বিসুলতানা