প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানাই, অভিনন্দন জানাই। এ অভিনন্দন জানানোর মাঝে এটুকু বলতে চাই যে, তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। এ প্রত্যাশার আলোকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতা দেখিয়েছেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনেছেন, শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছেন, দেশের মেগা প্রকল্পগুলোয় অনেক সাফল্য এনেছেন। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অনেক দক্ষতা তিনি দেখিয়েছেন। এসব বিচারে তিনি একজন সফল প্রধানমন্ত্রী, সফল রাষ্ট্রনায়ক।
তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা। বঙ্গবন্ধু এ জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। জাতির স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করেছেন বঙ্গবন্ধু। যেটুকু অর্জন আমরা দেখি, সেই অর্জনের সূচনা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসাবে তার কাছে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। সেই সংগ্রামে মানুষের অধিকার, মানুষের মূল্যবোধ, মানুষের আত্মমর্যাদাবোধ এবং মানবিক মূল্যবোধ-এসব দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবন্ধু বিশ্বে অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
একইভাবে তার কন্যা হিসাবে জননেত্রী শেখ হাসিনাও খেটে খাওয়া মানুষের জন্যই প্রাণপণ সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। জনপ্রত্যাশার অনেকটাই তিনি পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। তবে মানুষের তো প্রত্যাশার শেষ নেই। মানুষ সব সময়ই আশাবাদী, উচ্চাভিলাষী এবং বিভিন্ন আকাঙ্ক্ষা মানুষের থাকে। সেই আকাঙ্ক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হতেই পারে। তবে সেই সীমাবদ্ধতার জন্য তাকে এককভাবে দায়ী করা যাবে না।
সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রযন্ত্র, নাগরিক অধিকারের জন্য যে সচেতনতাবোধ, মানুষের মানবিকতা ও মূল্যবোধের উত্তরণ ঘটানোর যে প্রচেষ্টা, সেক্ষেত্রে তিনি সফলতার মাপকাঠিতে অগ্রগণ্য। এ সফলতার বিষয়ে বিশ্বের অনেক দেশই আজ পেছনের দিকে, সেখানে বাংলাদেশ উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে তার পক্ষে যতটুকু অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, আমার মনে হয় সেই বিচারেও তিনি অনেক উপরে স্থান করে নিয়েছেন। যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ধস নামে, সেই সময়ে বাংলাদেশে মূল্যবোধের উত্তরণ ঘটানোর কাজটি ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। তিনি মূল্যবোধকে ধরে রেখেছেন এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন। যেমন নারীর অধিকার, স্বাধীনভাবে মানুষের বাঁচার অধিকার, মানুষের শিক্ষার অধিকার-সবকিছুতেই আমাদের অনেক প্রত্যাশা আছে। সে প্রত্যাশা তিনি পূরণ করে যাচ্ছেন। সামগ্রিক বিবেচনায় জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবনে অর্জন বিশাল।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তার অবদান অনেক। ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধুর মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা ও এর প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে তিনি আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন-এ প্রত্যাশা আমাদের। তিনি গণতন্ত্রের উত্তরণে যে ভূমিকা রেখেছেন, সেটা আরও অগ্রগামী হোক। পররাষ্ট্রনীতিতে যে সাফল্য দেখিয়েছেন, সেটা তিনি আরও এগিয়ে নেবেন-এটাই আমাদের চাওয়া। আমি তার দীর্ঘায়ু ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। তার মমতার পরশ মানুষের কল্যাণে যতটা বিস্তৃত হয়েছে, তার আরও বিস্তৃতি ঘটুক।
ড. এ কে আজাদ চৌধুরী : সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।