পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক পথে যাতায়াত সহজ হওয়ায় যশোর-ঢাকা রুটে বিমানে যাত্রী সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বেকায়দায় পড়েছে বেসরকারি বিমান পরিবহন। ইতোমধ্যে উল্লেখিত রুটের ৭টি ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে দুটি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। ভাড়া কমিয়েও যাত্রী সংকট কাটানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা।

সূত্র জানায়, যশোর-ঢাকা রুটে চলতি বছরের শুরু থেকে গত জুন মাস পর্যন্ত তিনটি এয়ারলাইন্সের ১৫টি ফ্লাইট চলাচল করতো। এগুলো হলো, বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এবং নভোএয়ার। এ সময় যশোর বিমানবন্দর যাত্রীদের পদচারণায় মুখর ছিল। বিমানের টিকিটও সহজলভ্য ছিল না। চাহিদার কারণে দ্বিগুণ দাম দিয়ে যাত্রীদের বিমানের টিকিট সংগ্রহ করতে হতো বলে জানা গেছে।

আরোও পড়ুন: সাত পাকে বাঁধা পড়তে যাচ্ছেন আথিয়া শেঠি ও ক্রিকেটার রাহুল

দশ সাংগঠনিক বিভাগে সমাবেশের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি

কিন্তু গত ২৫ জুন দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু চালু হবার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৭০ ভাগ মানুষ আকাশ পথে ঢাকায় যাতায়াত করছে না। তারা সড়ক পথে পদ্মা সেতু দিয়ে কম সময়ে ঢাকা যাচ্ছে। যশোর ও ঝিনাইদহের ৩০ ভাগ মানুষও সড়ক পথ ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে। এ কারণে ভয়াবহ যাত্রী সংকটে পড়েছে যশোর থেকে ঢাকা চলাচলরত এয়ারলাইন্সগুলো।

বর্তমানে ওই রুটে বেসরকারি দুটি এয়ারলাইন্সের ৭টি ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ইউএস বাংলার ৭টি ফ্লাইটের মধ্যে চলাচল করছে তিনটি এবং নভোএয়ারের ৫টির মধ্যে চলাচল করছে দুটি। বাংলাদেশ বিমানের দুটি ফ্লাইট অব্যাহত রয়েছে। এ হিসেবে বর্তমানে প্রতিদিন ৭টি ফ্লাইট যশোর-ঢাকা রুটে চলাচল করছে। তারপরও বেশিরভাগ ফ্লাইট অর্ধেক বা তারও কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এ দিকে, ভাড়া কমিয়ে নানারকম অফার দিয়ে যাত্রী ধরে রাখার চেষ্টা করছে এয়ারলাইন্সগুলো। সোমবার নভোএয়ার ঢাকা রুটের ভাড়া কমিয়ে কমপক্ষে তিন হাজার ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করে। আজ (৬ সেপ্টেম্বর) থেকে ইউএস বাংলাও একই ভাড়া নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে এ দুটি এয়ারলাইন্সের ভাড়া ছিল চার হাজার পাঁচশ টাকা। ঈদসহ বিশেষ সময়ে দশ হাজার দুশো, আট হাজার পাঁচশ বা সাত হাজার দুশো টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। উল্লেখিত রুটে বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া গত জুলাই মাসে ছিল তিন হাজার দুশো টাকা। বর্তমানে এ ভাড়াতেই তাদের দুটি ফ্লাইট যশোর রুটে চলাচল করছে।

নভো এয়ারলাইন্সের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বাহাউল ইসলাম পদ্মা সেতুর প্রভাবের কারণে তাদের যাত্রী সংখ্যা কমেছে বলে মন্তব্য করেন। এ প্রসঙ্গে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মিডিয়া কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হবার পর যশোরাঞ্চলের মানুষ সড়ক পথেই বেশি ঢাকায় যাতায়াত করছে। এ কারণে ফ্লাইট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে পদ্মা সেতুর প্রভাব বাংলাদেশ বিমানে পড়েনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিমান যশোরের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান। যাত্রী কিছুটা কম হলেও অফ সিজনের কারণে এমন হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।