ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল সেবা প্রবর্তন এবং আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা স্থাপনে জোর দিচ্ছে। এই টেকসই ভূমি ব্যবস্থায় সঠিক দলিলাদি ছাড়া কেউ কোনো জমি দখল করে রাখতে পারবে না। এর ফলে অবৈধ দখলদাররা ভূমি দস্যুতার সুযোগ পাবে না। জমির মালিকানা হবে শুধুমাত্র দলিল-পত্রাদির ভিত্তিতে।’

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ভূমি ভবনে অনুষ্ঠিত ‘বার্তা, দাপ্তরিক স্মৃতিকোষ এবং অনলাইনে জলমহালের আবেদন প্রক্রিয়া’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তি‌নি এ কথা বলেন।

এসময় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে সরকারের সব সায়রাত মহালের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশনের আওতায় চলে আসবে। ইতোমধ্যে ৭৬ শতাংশ সরকারি ভূ-সম্পদ, খাস জমি ও সায়রাত মহালের তপশিল ভূমি তথ্য ব্যাংকে আপলোড করা হয়েছে। ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রকৃত পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে সরকারি সম্পদ ইজারা দেওয়া সম্ভব হবে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।’

ভূমি সচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে অটোমেটেড চালান সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেডেট করে ভূ-সম্পদ ইজারা ব্যবস্থার জন্য অর্থ গ্রহণের সিস্টেম স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তখন পেমেন্ট গ্রহণের জন্য ব্যাংক ড্রাফট গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। ফলে ভবিষ্যতে ইজারাগ্রহীতাদের আর ব্যাংকে যেতে হবে না।’

সচিব আরও জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে জলমহাল ইজারার আবেদনে অনেক সময় জলমহাল ইজারা প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালদের নানা অপকৌশলের কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীগণ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতেন। এখন আর সেই সুযোগ নেই। পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে জলমহাল আবেদন শুরুর পর কোনো ধরনের অভিযোগ আসেনি।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক বলেন, ‘অনলাইনে জলমহাল আবেদন ব্যবস্থার কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জলমহাল ইজারা গ্রহণ করতে পারবেন।’

অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘বার্তা’ অ্যাপের মাধ্যমে শুভেচ্ছা পাঠান। এছাড়া, একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অনুষ্ঠানস্থলে অনলাইনে জলমহাল আবেদন করেন।

অনুষ্ঠানে ‘দাপ্তরিক স্মৃতি কোষ’-এর ওপর একটি সচিত্র উপস্থাপনা করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির, পিএএ।

ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম এমপি, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খানসহ ভূমি মন্ত্রণালয় ও এর আওতাভুক্ত দপ্তর-সংস্থা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।