সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ১৬টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৪ টাকা। রোববার (৩০ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রি সভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভায় অন্যদের মধ্যে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো.সামসুল আরেফিন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র তৃতীয় এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটির অনুমোদনের জন্য ৩টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১৬টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। ক্রয় কমিটির প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৭টি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৩টি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৩টি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ১টি, জননিরাপত্তা বিভাগের ১টি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল।

ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ১৬টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৪ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি হতে ব্যয় হবে ৪৪৯ কোটি ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮১ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক ও বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৯৩৭ কোটি ৯০ লাখ ৩২ হাজার ১৮৩ টাকা।

সভায় ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)-এর জন্য জন্য ১টি ভেহিক্যাল মাউন্টেড ডাটা ইন্টারসেপ্ট সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমেরিকার মোবেলিয়াম ইনকরপোরেশন থেকে এটি সংগ্রহ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার (ফেজ-৩)’ প্রকল্পের কম্পোন্যান্ট-২ বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে কাওয়াই এ/এস এবং মুট ম্যাগডোনাল্ড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে। এ জন্য ব্যয় হবে ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩০৮ টাকা।

কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ-এর নিকট থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৭৮০.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে সর্বমোট ২ কোটি ৩৪ লাখ ১৫ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় ২০১ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যয় হবে।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে দুই লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মে. টন ডিএপি সার ৮৮৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৪০ হাজার টন সার আমদানি করতে ব্যয় হবে ৩ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ৩০৪ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে প্রথম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানির অপর একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মে. টন টিএসপি সার ৭১৭ মার্কিন ডলার হিসেবে কিনতে ব্যয় হবে ২ কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১৮৫ কোটি ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়া থেকে দুই লটে ৩০ হাজার মে.টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মে. টন এমওপি সার ৫৯৩.৭৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ আমদানি করতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ৬২৫ টাকা।

সভায় ‘পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ প্রকল্পের ৩টি পৃথক প্রস্তাবে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এই ৩টি প্রস্তাবে মোট ব্যয় হবে ১৫৭ কোটি ৮৫ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ টাকা।

এ ছাড়াও ‘রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলার পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই ৭টি প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ২৩৫ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

 

কলমকথা/সাথী