বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে একের পর এক মর্টার শেল পড়ার ঘটনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা দিয়েছে মিয়ানমার।

ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীকে ডেকে মিয়ানমার আরাকান আর্মির পাশাপাশি রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরসার ওপর সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দায় চাপিয়েছে দেশটি।

তারা বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ক’ নষ্ট করার স্বার্থে এই দুই পক্ষ মিলে সীমান্ত এলাকায় চলমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌশলগত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক জ ফিউ উইন এমনটা বলেছেন।

মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই বৈঠকের তথ্য প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে জ ফিউ উইন বলেছেন, আরসাকে সঙ্গে নিয়ে আরাকান আর্মি গত ১৬ সেপ্টেম্বর তংপিউ (বাম) বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৩১ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা দিয়ে হামলা চালায়।

ওই হামলার সময় ৩টি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডে পড়েছিল। এর পাশাপাশি আরাকান আর্মি ও আরসা ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তংপিউ (ডান) বিজিপির ৩৪ নম্বর সীমান্ত ফাঁড়িতে মর্টারের গোলা নিয়ে পৃথক হামলা চালায়। এ সময় ৯টি মর্টারের গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে।

বৈঠকে জ ফিউ উইন ওই ২টি ঘটনা উল্লেখ করে দাবি করেছেন, আরাকান আর্মি ও আরসা বাংলাদেশ-মিয়ানমারের বিদ্যমান ‘আন্তরিক সম্পর্ককে’ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে হামলাগুলো চালিয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া ৪টি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক যুবক নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ ৫ জন।

এর আগে, বাংলাদেশের মধ্যে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেল পড়লে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে প্রতিবাদ করা হয়। কিন্তু এরপরও মিয়ানমার সীমান্তে মর্টার শেল ছোড়া অব্যাহত রেখেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ডে থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। তার আগে, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ২টি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে।

গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোড়া ২টি মর্টারশেল বান্দরবানের ঘুমধুম এলাকায় এসে পড়ার ঘটনায় পরদিন ২৯ আগস্ট দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ।

ওই সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আমরা ডেকেছি। একটা মৌখিক নোটের মাধ্যমে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে।

কলমকথা/এমএনহাসান