দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শহরমুখী হওয়ার প্রবণতারোধে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। গ্রামের মানুষ যেন সব সুবিধা পায়, শহরমুখী যেন না হয় সে জন্য কাজ করছি।
সেখানে যেন কর্মসংস্থান হয়, সেভাবেই আমরা নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছি। এর জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় যা যা করা প্রয়োজন তা করছি। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না। কৃষিজ উৎপাদন বাড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের ২৪তম জাতীয় সম্মেলন ও ৪৩তম কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার নির্দেশে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। ২১ বছর পর সরকারে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমিও কাজ শুরু করি। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ যেন উন্নয়নের স্বাদ পায় সে জন্য কাজ করছি।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমরা দেশকে নতুন স্তরে নিতে চেয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দারিদ্র সীমা ২০ শতাংশে এনেছি। করোনার মধ্যেও জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ৬.৯ শতাংশতে উঠে আসে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ও আমাদের উন্নয়ন কাজে প্রভাব পড়েছে। তবে এই অবস্থার মোকাবিলায় উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না। কৃষিজ উৎপাদন বাড়াতে হবে। যাতে করে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির প্রভাব না পড়ে। কিছু খাবার নিজেরা উৎপাদন করতে পারলে বাজারে চাপ পড়বে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২০৪১ সালের বাংলাদেশ নিয়ে আমরা কাজ করছি। তরুণ প্রজন্ম সে সময়ের কারিগর হবে। অষ্টম পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, এতে এসডিজি বাস্তয়বায়ন সম্ভব হবে। ডেল্টা প্ল্যান অনুযায়ী আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
এ সময় নোবেল পাওয়া একজন ব্যক্তি পদ্মা সেতু তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটি ব্যাংকের এমডি পদে থাকার জন্য পদ্মা সেতু নিয়ে একজন নোবেল পাওয়া ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করেছেন, বিভিন্ন পক্ষকে দিয়ে হুমকি দিয়েছেন। ষড়যন্ত্রের এক পর্যায়ে সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়। তখনই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বানানোর কথা বলেছিলাম। সেতু নির্মাণ কাজে জড়িত সব ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, শ্রমিকসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক ও সাবধান হয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, আজ প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও রেশনিং করা হচ্ছে। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, মিতব্যয়ী হতে হবে, সঞ্চয়ী হতে হবে। খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমার দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে আপনাদের সব ধরনের দাবি ও সমস্যার সমাধান করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আইডিইবির তিন বরেণ্য সদস্য প্রকৌশলীকে স্বর্ণপদক ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। সম্মাননা পাওয়া তিন জন হলেন- বীরপ্রতীক এমএ হালিম এবং ফজলুল করিম খান ও মোহাম্মদ আলী।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।