শেখ মোস্তফা কামাল, কেশবপুর যশোর প্রতিনিধিঃ বাংলা সাহিত্যের অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২৫ জানুয়ারী ১৯৮তম জন্মবার্ষিকী। মহামারি করোনা ভাইরাস এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিস্তাররোধকল্পে বর্তমান সরকারি বিধিনিষেধ আরোপ থাকায় মহাকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে এবছরও ৭দিনব্যাপী হচ্ছেনা মধুমেলা।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র ২৫ জানুয়ারী (মঙ্গলবার) একদিনের সল্প পরিসরে মধুমঞ্চে মহাকবির জীবনীর উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

মহাকবির জন্মবার্ষিকীতে প্রতিবছরই সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে কবির স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদপাড়ে কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে আয়োজন করা হয়ে থাকে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা। মেলায় দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। মধুপ্রেমী ও বরেণ্য কবি সাহিত্যিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে সাগরদাঁড়ি মধুপল্লীসহ গোটা এলাকা। কিন্তু মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে সরকারী বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষে পরপর দু’বছর সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা উদযাপন করা সম্ভব হয়নি। বেশ কিছুদিন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় এবছর এলাকাবাসী ও মধূপ্রেমীদের মনে আশা ছিল, কিন্তু সব আশার গুড়েবালি। দেশে আবারও করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এর প্রভাব বিস্তার করায় তৃতীয়বারের মতো এবারও ৭ দিনব্যাপী মধুমেলা হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারী) সকালে যশোর জেলা ও কেশবপুর উপজেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক আলোচনা সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

ঘরোয়া পরিবেশে উক্ত মধুমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধান অতিথি হিসেবে যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ তমিজুল ইসলাম খান।

একদিনের মধুমঞ্চে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান হওয়ায় এবছর দেশ-বিদেশের বরেণ্য কবি-সাহিত্যিকদের আনাগোনা সাগরদাঁড়িতে দেখা মেলবে খুব কম।

উল্লেখ্য, ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ঐতিহ্যবাহী যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদ পাড়ে সাগরদাঁড়ি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলা সাহিত্যের ক্ষনজন্মা মহাপুরুষ, প্রাণের কবি, অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক আধুনিক বাংলা কাব্যের রূপকার মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

জমিদার পিতা রাজনারায়ন দত্ত এবং মাতা জাহ্নবী দেবীর কোল আলোকিত করে মহাকবি এই পৃথিবীতে আর্বিভূত হন।
১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন কলকাতার আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন (অর্থাভাবে) অবস্থায় মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব ও বর্তমান সরকারি বিধিনিষেধ এর কারণে এবছর সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপি মধুমেলা করা সম্ভব হচ্ছে না। মহাকবির জন্মদিন উপলক্ষে একদিনের জন্য সল্পপরিসরে কবির জীবনের উপর আলোকপাত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।