নিউজ ডেস্ক:-
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘আশা’ দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তা ও স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধে নিজস্ব অর্থায়নে দেশব্যাপী ‘আশা- শিক্ষা কর্মসূচি’ পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে ৬৪ জেলায় ১ হাজার ৫০ টি আশা ব্রাঞ্চের ১৮ হাজার ৪৫০ শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষার্থী এই কর্মসূচির সুবিধা পাচ্ছে। এর অংশ হিসাবে পঞ্চগড় জেলায় ১৪ টি আশা-ব্রাঞ্চের ২১০ টি শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে ৭ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী এই সুবিধার আওতায় এসেছে। এছাড়াও আশা শিক্ষা কর্মসূচি প্রাথমিক স্তর ছাড়াও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠ সহায়তা প্রদান করছেন।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে আশা-শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করছে দেশের শীর্ষ বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা “আশা”। ২০১১ সাল থেকে চলমান এই কর্মসূচি পরিচালনার ব্যয় আশা’র নিজস্ব আয় থেকে নির্বাহ করা হচ্ছে।
আশা-শিক্ষা কর্মসূচির লক্ষ ও উদ্দেশ্য: প্রাথমিক পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ঝরে পড়া হ্রাস করা, নি¤œ ও নি¤œমধ্যবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের দেয়া পাঠ আয়ত্ত করতে সহায়তা কার, প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করা, প্রাক-প্রাথমিক পরিচর্যার মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরে ভর্তির জন্য নতুন শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত কর।
উপকারভোগী : আশার সদস্যদের সন্তান এবং সদস্য বহির্ভূত দরিদ্য পরিবারের সন্তান- যারা শিশু শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণিতে যেকোন সরকারি/বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়/সরকারি বই পাঠদান করে এমন মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীগন।
আশা- শিক্ষা কর্মসূচির অন্তভূক্ত প্রত্যেকটি ব্রাঞ্চে ১৫ টি শিক্ষা কেন্দ্র থাকে। প্রত্যেকটি শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা করার জন্য একজন শিক্ষা সেবিকা নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৫টি শিক্ষাকেন্দ্র মনিটরিং করার জন্য প্রতিটি ব্রাঞ্চে ১ জন করে শিক্ষা সুপারভাইজার কর্মরত রয়েছে। শিক্ষা সুপারভাইজার প্রত্যেক দিন সকালে ও বিকালে ৫-৬ টি শিক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং ঘাটতি থাকলে তা পূরণের কার্যকারী ব্যবস্থা নেন। শিক্ষা সুপারভাইজার প্রতিনিয়ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখেন ও শিক্ষার্থীর লেখাপড়া সম্পর্কে খোজ-খবর রাখেন।
পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ, সোনাহার ও টেপ্রীগঞ্জ আশা ব্রাঞ্চে শিক্ষা কর্মসূচি চলমান রয়েছে। আশা-টেপ্রীগঞ্জ ব্রাঞ্চে শিশু-৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কুল সময়ের আগে বা পরে স্কুলের পাঠ তৈরীতে সহায়তা করে। আশা-টেপ্রীগঞ্জ ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, আশা শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে অত্র ব্রাঞ্চের আওতায় দারিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শিক্ষা সহায়তা পাচ্ছেন। আশার সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার মান আরোও উন্নত হবে আমি আশাবাদী। আশা টেপ্রীগঞ্জ ব্রাঞ্চের শিক্ষা সুপারভাইজার মোঃ রুহুল আমিন জানান, টেপ্রীগঞ্জ ব্রাঞ্চের আওতায় ১৫ টি শিক্ষা কেন্দ্রে প্রায় ৮৫০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা সহায়তার আওয়াতাভূক্ত রয়েছে। আশার সদস্য ছাড়াও যেকোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচীর সহায়তা নিতে পারেন। টেপ্রীগঞ্জ ব্রাঞ্চে প্রতি ৪ মাস পর পর শিক্ষা সেবিকাদের পাঠদানের কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধিতে পিটিআই/ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর বা এইইউও এর মাধ্যমে ২ দিন ব্যাপী প্রশিক্ষন কর্মশালার আয়োজন করা হয়। তিনি আরোও জানান, কর্মসূচীর আওতাধীন এলাকার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে তিনি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিষয়ে যোগাযোগ রাখেন। শিক্ষা কর্মসূচি অন্তর্ভূক্ত ব্রাঞ্চে প্রতি মাসে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ৬-৮ টি শিক্ষা কেন্দ্র, এড়িয়া ম্যানেজার ২ টি শিক্ষা কেন্দ্র, ড্রিস্ট্রিক ম্যানেজার সহ শিক্ষা অফিসারগন ২ মাস অন্তর প্রত্যেকটি ব্রাঞ্চ মনিটরিং করেন। একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়েল শিক্ষক জানান, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ঝড়ে পড়া রোধ, শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়া সহ অত্র এলাকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এরকম সুন্দর শিক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থা করার জন্য তিনি ‘আশা’ কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।