মোঃ মাজিদুর রহমান মাজদার,পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটে কোটি টাকার রাজস্ব আদায় নেই কোন উন্নয়ন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাছ ও মাংস হাটায় পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় মাছের পানি ও গরু, খাসি জবেহর রক্ত জমে পচা-দুর্গন্ধময় পরিবেশের মধ্যে বেচাকেনা চলছে উপজেলার বানেশ্বর হাটে। গত মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে ওই হাটে এ দৃশ্য দেখাগেছে। হাটের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও বিক্রেতারা জানান, উপজেলার গরু, ছাগল ও গৃহস্থালি পণ্যের জন্য প্রসিদ্ধ বানেশ্বর হাট। সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার দুইদিন বসে এখানে হাট। এটি উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট হিসেবে পরিচিত। এই হাট থেকে প্রতিবছর সরকার কোটি
টাকার রাজস্ব আদায় করে থাকে। কিন্তু হাটটি উন্নয়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজরদারি নেই। গত বছর এই হাট থেকে ১ কোটি ৬ লক্ষ ২৭ হাজার টাকায় হাটটি ইজারা দেওয়া হয়।
এছাড়াও ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১০ শতাংশ আয়কর দিয়ে মোট ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়। ২০০২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় বিভাগ থেকে জারিকৃত সরকারি হাটবাজার ইজারা পদ্ধতি, ব্যবস্থাপনা ও আয় বন্টন বিষয়ক নীতিমালা অনুযায়ী, হাট ইজারার ১৫ শতাংশ টাকা সংশ্লিষ্ট হাটের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কাজে খরচ করার কথা রয়েছে। তবে যেসব হাটে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উন্নয়নমূলক কাজ করছে, সেসব হাটে শতকরা ১৫ টাকার পরিবর্তে শতকার ২৫ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া যাবে। উপজেলার অন্য সব হাটের বিক্রয় ছাউনি, নলকুপ, গণশৗচাগার উন্নয়নের কাজের জন্য ইজারাদার শতকরা ১০ টাকা উপজেলার উন্নয়ন তহবিলে জমা করতে হবে।
এছাড়াও ইজারার শতকরা ৫ টাকা হাটটি যে ইউনিয়নে অবস্থিত সে ইউনিয়ন পরিষদকে অতিরিক্ত হিসেবে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বানেশ^র হাটটি ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের দুই পশে অবস্থিত। হাটটির স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে প্রায় হাজার খানেকের বেশি দোকান রয়েছে।
বেশির ভাগ দোকানে নেই কোন ছাউনি। মাছ সহাটা ও মাংস হাটায় অবস্থা পরিবেশ পচা দুর্গন্ধ যুক্ত। মাছ, মাংস হাটার একমাত্র ড্রেনটি বন্ধ রয়েছে। তাই গরু খাসির জবেহর রক্ত ও মাছের পানি জমে পচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই হাটে জমে পানি। এছড়াও মাছ হাটার পশের পুকুরটি বর্তমানে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। হাটের মাছ ব্যবসায়ী, আমিনুল, শাহজাহান, শাহারুলসহ বেশ কিছু মাছ ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ময়লার ভাগ থেকে বর্ষার সময় পোকা মাকড় উঠে আসে মাছ হাটায় এরই মধ্যেই আমাদের ব্যবসা করতে হয়।
এছাড়াও মাংস হাটার কসাই অলমগীর, মাহাবুল ও হযরত আলী জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে নোাংড়া হাট বর্তমানে এটি। এখানে একটি ড্রেন ছিলো। এই ড্রেনের মাধ্যমে রক্ত, পানি পাশের নদীতে যেতো। বর্তমানে ড্রেনটি বন্ধ থাকায় এগুলো আমাদের মাংস হাটা বা মাছ হাটায় জমা হচ্ছে। ড্রেনটি সংস্কারের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। হাট ইজারাদার ওসমান গণি জানান, প্রতিবছর কোটি টাকার বেশি দিয়ে হাটটি ইজারা নেওয়া হয়। তবে হাটটির তেমন কোন উন্নয়ন হয়না। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে হাটটির উন্নয়নের কথা জানালেও হাটটি তেমন কোন উন্নয়ন হয়না। এছাড়াও তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদে হাটবাজার উন্নয়নের জন্য ৭৮ লক্ষ টাকা রয়েছে। এই টাকা দিয়ে উপজেলা বিভিন্ন হাটবাজারের উন্নয়ন করা সম্ভব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ জানান, বানেশ^র হাটের মাংস ও মাছ হাটার বন্ধ ড্রেনটি একটি প্রজেক্টের মাধ্যম সংস্কার করা হবে। এছাড়াও হাটের অন্যান্য যে সকল সমস্যা আছে তা পর্যায় ক্রমে দেখা হবে বলে এ কর্মকর্তা জানান।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।