এস এম তাজাম্মুল, মণিরামপুরঃ যশোরের মণিরামপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠান চলাকালে বহিরাগত ও সাবেক ছাত্রদের দ্বারা মারপিটের শিকার হয়েছে বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা।

প্রধান শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকা অবস্থায় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কারা ঘটিয়েছে কেনো ঘটিয়েছে এবং কিভাবে তারা এমন ঘটনা ঘটিয়ে চলে গেছে এমন সব প্রশ্ন এনে শিক্ষার্থীদের সহ প্রধান শিক্ষককে তালা বদ্ধ করে রাখে স্থানীয় জনগন ও অভিভাবকরা।

খবর পেয়ে মণিরামপুর থানা পুুলিশের এএসআই সোহেল রানা পারভেজ ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেন উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। ঘটনাটি ঘটেছে ৩১শে মে (বুধবার) বেলা ১২টার দিকে মণিরামপুর উপজেলার ১২নং শ্যামকুড় ইউনিয়নের জি এইচ পাড়দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

শিক্ষার্থীদের তথ্যমতে,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরের খেলাতে জিতে যাওয়া ১০০(একশত)টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে জি এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্র আতিকুর রহমান ও তাসনিমুল আবিদ এবং একই প্রতিষ্ঠানের ১০ম শ্রেনীর ছাত্র রাসেদুল ইসলাম ও রিয়াজউদ্দিন বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি কাউকে কিছু না জানিয়ে ৮ম শ্রেনীর ছাত্র আতিকুর রহমান(রোল নং-১৫) নামধারী কিছু সাবেক ছাত্র ও বহিরাগতদের খবর দেয়।কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই উপজেলার কাশিপুর গ্রামের জগো বিশ্বাস-পিতা-গোপাল বিশ্বাস,সাব্বির হোসেন-পিতা-আখতার হোসেন,বোরহান উদ্দিন-পিতা-আসাদুল ইসলাম,বায়জিদ হোসেন-পিতা-ইনসার আলী সহ ৫/৭জন বহিরাগত লোক এসে ভুক্তভোগী ১০ম শ্রেনীর ছাত্র রাসেদুল ইসলাম ও রিয়াজউদ্দীন সহ ৪/৫জন ছাত্রের উপর চড়াও হয়ে প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় তলায় উঠে মারপিট করে চলে যায়।

মারপিটের স্বীকার হওয়া ছাত্ররা বাইরে আসলে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনার সঠিক বিচারের দাবী জানিয়ে তালাবদ্ধ করে দিলে মুহূর্তের মধ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহায়তায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্র মোঃ রাসেদুল ইসলাম ও মোঃ রিয়াজ উদ্দীনের অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত শালিসে অভিযোগ করে বলেন,এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে,এই প্রধান শিক্ষক(আঃ গফুর) বিভিন্ন সময়ে নানা রকম ঘটনায় উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন।তার উপস্থিতিতে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিভাবে হয়।এ বিষয়ে তিনি জেনেও কেনো কোন পদক্ষেপ নেননি? আমরা এই উদাসীন প্রধান শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চাই।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে জে এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃকামরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি লজ্জিত ও মর্মাহত। এটা আমার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়।এবিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিভাবক ও স্থানীয় জনগনের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখবে ম্যানেজিং কমিটি।আগামি রবিবার জরুরি মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

পাড়দিয়া বাজারের এক দোকানদার শালিসে উপস্থিত হয়ে বলেন,এখানকার ছেলে মেয়েরা আমার দোকান থেকে কেনাকাটা করে,আমি দোকানে বসে ছিলাম হঠাৎ দেখি রাসেদুল(ভুক্তভোগী)কাঁদতে কাঁদতে যাচ্ছে।আমি ডেকে জিজ্ঞেস করাতে মারপিটের ঘটনা খুলে বলে।তারপর আমরা স্থানীয় অভিভাবক ও জনগন মিলে স্কুলে তালা দিয়েছিলাম।চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমরা তালা খুলে দেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন,আমার প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনায় আমি নিজেও আতংকিত।কয়েকজন এসে আমাকে পূর্বের ঘটনায় অভিযোগ করে চলে যায়।আমি সকলের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, এঘটনায় আমি নিজে উপস্থিত হয়ে আইনে সহায়তা নিবো।প্রয়োজনে মামলা করবো।এমন ঘটনা আগামিতে আর ঘটবে না ইনশাআল্লাহ।
এ ঘটনায় উপস্থিত হয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন,জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি ভুক্তভোগীদের সমজতায় এনেছি।যেহেতু তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক ও একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তার জন্য আমি তাদের মধ্যে মিল করে দিয়েছি। তবে হামলাকারীরা কোন ভাবেই ছাড় পাবেনা।

এ বিষয়ে মণিরামপুর থানা পুলিশের এএসআই সোহেল রানা পারভেজ বলেন, আমি প্রশাসনের লোক হিসেবে এটাই বলতে পারি আপনারা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আইনের আশ্রয় নিবেন, সেটা প্রধান শিক্ষক,স্কুল ম্যানেজিং কমিটি বা স্হানীয় জনগণ। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।