স্টাফ রিপোর্টার: যশোর কেশবপুর উপজেলার বিভিন্নস্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে পরিবেশন করা হচ্ছে অশ্লীল নৃত্য। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হিন্দি-ভজপুরী গানের সংমিশ্রণ বাজিয়ে অশ্লীল এ নৃত্য পরিবেশন হলেও নজর নেই প্রশাসনের।
ঈদ পূর্ণমিলনী নামে সংস্কৃতিকে দাবিয়ে রেখে বিদেশি গান বাজিয়ে এমন নৃত্য চলায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ সুশীল সমাজের মধ্যে।
এধরণের অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনীতে দর্শক সারিতে ভিড় করছে স্কুল-কলেজ পড়য়া শিক্ষার্থীসহ এলাকার যুবসমাজ।
সুশীল সমাজের অভিযোগ, আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের মাঠে সাগরদাঁড়ী চৌরাস্তা যুব সংঘের উদ্যোগে সংস্কৃত অনুষ্ঠানে নামে অশ্লীল নৃত্যর কারণে
কেশবপুরের মানুষকে সর্বোপরি বাংলাদেশকে পরিচিত করেছিলেন এ এস এইচ কে সাদেক মহোদয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ চঞ্চল কুমার বিশ্বাসের মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে।কলেজের পাশেই সমাধি করা রয়েছে প্রতিষ্ঠাতার অধ্যক্ষ।
অনুষ্ঠানে কিছু ক্লাব থেকে ভাড়া করা মেয়েদের অর্ধনগ্ন শরীরে নাচানো হচ্ছে। যার কারনে পরিবেশ থাকছে না পরিবার নিয়ে দেখার।
সম্প্রতি উপজেলার ২নং সাগরদাঁড়ী ইউনিয়নের আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেখা যায়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানের তালে তালে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশনে ৪(চার) তরুণী। তাদের সঙ্গে নাচতে যোগ দেন মঞ্চের ওপর ও সম্মুখ সারিতে থাকা দর্শকরা। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বয়স্ক, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
ওইগ্রামের রাজ্জাক বলেন, ‘কথা ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিন্তু আমি সপরিবারে গিয়ে দেখলাম বিভিন্ন ক্লাব থেকে ভাড়া অশ্লীল নৃত্য। এমন নৃত্য দেখে স্ত্রী, বোন ও সন্তানদের নিয়ে অনুষ্ঠান থেকে উঠে আসতে বাধ্য হয়েছি। আসলে আমাদের সংস্কৃতি কোথায়? অশ্লীল নৃত্যকে সাংস্কৃতিক নৃত্য বানানো হচ্ছে তাও আবার একজন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষর সমাধি’র পাশে এসব বন্ধে প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন।
কেশবপুরের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু পল্টু বলেন, ‘এলাকায় গড়ে ওঠা কিছু ক্লাব ভাড়ায় মেয়েদের নাচিয়ে থাকে। তারাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নাম কলুষিত করছে। এবং আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা এ এস এইচ কে সাদেক মহোদয়ের নামে কলেজটি, সেখানে অশ্লীল নৃত্য কখনোই শোভনীয় নয়। প্রশাসনের নজরদারি কামনা করছি। এভাবেই চলতে থাকলে বাংলার সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে অশ্লীল ওইসব নৃত্য রাজত্ব করবে।
সাগরদাঁড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল হাসান নাঈম বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে বেহায়াপনার প্রদর্শনই যুব সমাজকে ধর্ষণের মতো ঘৃণিত ঘটনা ঘটাতে উৎসাহিত করে। প্রশাসনের উচিত এধরণের অনুষ্ঠান বন্ধসহ আয়োজকদের দৃষ্টান্ত শাস্তি নিশ্চিত করা।
শিক্ষক মনিরুজ্জামান শহিন বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে অশ্লীল নাচ চলছে সেগুলো প্রশাসনের তদারকি প্রয়োজন। কেনোনা তরুণ-কিশোররা এধরণের নাচ দেখে বিভিন্ন ধরণের অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। আয়োজকসহ যেসকল ক্লাব মেয়েদের ভাড়া খাটিয়ে এধরণের নাচ পরিবেশন করছে তাদেরকে সমাজ থেকে বয়কট করা প্রয়োজন।
আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্যামল ঘোষ বলেন, কলেজের মাঠে অনুষ্ঠানে কোন অনুমতি নেয়নি আয়োজকরা, এবং আমাকে কলেজের দপ্তরি এবং নাইট গার্ড কেউ আমাকে বিষয়টি জানায়নি, আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল আলম বলেন, ‘কবে কখন হয়েছে এমন অনুষ্ঠান আমি জানিনা এবং আমাকে কেউ জানায় নি। এমন অনুষ্ঠান চলাকালিন জানতে পারলে ব্যববস্থা নেওয়া যেতো।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।