মামুনুর রশীদ মামুন , কুড়িগ্রামঃ

শিল্পকারখানা খুলে দেয়ায় চাকুরি বাঁচাতে করোনা আতংক ও কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে জনস্রোত নেমেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের রমনা ঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে হাজার হাজার শ্রমিক দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে গত তিনদিন যাবত বিকল্প পথে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকায় ও অন্য জলযানে চড়ে ঢাকায় যাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই ও স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না কেউ। পা ফেলানোর জায়গা নেই নৌকা কিংবা নৌযানগুলোতে। নৌকার বাইরে ড্রেজারেও চরে অনেককে নদী পার হতে দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ৭ থেকে ৮টি নৌকা অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে রৌমারীর দিকে যায়। রৌমারী থেকে জামালপুর হয়ে তাদের গন্তব্যস্থল হবে ঢাকা। এ অবস্থা চিলমারীর রমনাঘাটেই শুধু নয় জোরগাছ ঘাট ও ফকিরেহাট ঘাট এলাকায়ও চলছে নৌকা দিয়ে যাত্রী পারাপার। এছাড়াও ওই উপজেলার রাজারভিটা ও সোনারী পাড়া এলাকা থেকে আলাদাভাবে নৌকা ভাড়া করে ঢাকামুখী হচ্ছেন বহু শ্রমিক। এদিকে দ্রুত ঢাকা ফেরার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের নিকট থেকে নৌকা চালকগণ আদায় করছে দ্বিগুন ভাড়া।

ভুরুঙ্গামারীর গার্মেন্টসকর্মী আবু সাঈদ বলেন, অফিস থেকে আমাদের ফোন দেয়া হয়েছে। কাল গার্মেটস খোলা। কাল যদি অফিস না করি তাহলে ঈদের ছুটি সহ সব হাজিরা অনুপস্থিত দেখাবে। এজন্য রাস্তায় বাস না চলায় ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে জামালপুর হয়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করছি। এছাড়াও টিকিটে ৭০ টাকা লেখা থাকলেও জনপ্রতি ভাড়া ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, চলমান লকডাউনে হঠাৎ করে শিল্পকারখানা খোলার নির্দেশ শুনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মজীবী কুড়িগ্রামের সবকটি উপজেলার ও লালমনিরহাট জেলার গার্মেন্টস শ্রমিকরা হুমড়ি খেয়ে এ নদে ভিন্ন পথে ঢাকা যেতে শুরু করে। শনিবার থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তারা।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এভাবে জীবনের হুমকি নিয়ে পারাপার বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে সেখানে নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ’র লোকজনকেও বলা হয়েছে যাতে কোন দুর্ঘটনা কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘণ না হয়।