রাকিবুল হাসান আহাদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বাবা, মা ও ছেলে মিলে হত্যা করেছে অপর ছেলেকে। ঘটনাটিট ঘটেছে উপজেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামে। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে হতভাগা শারফুল ঢালী বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট ২০২১) সকাল সাড়ে ছয়টায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত বাবা, মা ও ছোট ভাই পলাতক রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর (৫৮) ছেলে শারফুল দীর্ঘ ৮ বছর লেবাননে প্রবাসী ছিলেন। সেখানে ভালো বেতনে চাকুরী করতো। গত ছয় মাস পূর্বে সে দেশে ফিরে আসে। প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় আয় রোজগারের সমস্ত টাকা সে তার পিতার নামে দেশে পাঠিয়ে দিতো। দেশে ফেরত আসার পর তার পিতা তাকে কোন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি হাত খরচের টাকাও শারফুল ঢালী তার পিতার কাছে চেয়ে পেতো না। এ নিয়ে পিতা পুত্রের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। বুধবার সকাল ছয়টার দিকে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে পিতা ইসহাক ঢালী, মা হোসনে আরা (৪৭), ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী (২৮) লোহার রড় ও শাবল দিয়ে শারফুল ঢালীল মাথা, পা ও বুকে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় বসতঘরের একটি রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। শারফুল ঢালীকে মারার সময় চিৎকারে নিহত শারফুল ঢালীর চাচা-চাচীসহ এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করতে গেলে ইসহাক ঢালী, হোসনে আরা, আশরাফুল ঢালী রড, শাবল ও রামদা দিয়ে এলাকাবাসীকে তাড়া দেয়। দীর্ঘক্ষন আহত শারফুল ঢালীর সাড়াশব্দ না পেয়ে তার চাচা তার চাচা নুরুল ইসলাম ঢালী (৫৬), মোঃ ইসমাইল ঢালী, চাচী নাছিমা খাতুন (৪৬) স্থানীয় ইউপি (নিগুয়ারী) চেয়ারম্যান শেখ শাহাবুদ্দিনকে ঘটনাটি জানায়। ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শাহাবুদ্দিন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে শারফুল ঢালীকে তাদের বাড়ি থেকে মূঘূর্ষ অবস্থায় উদ্ধঅর করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ২৪ ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে শারফুল ঢালী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। নিহতের চাচা নূরুল ইসলাম ঢালী জানান, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে ছেলে শারফুল ঢালীর সাথে তার পিতার-মাতার প্রায়ই ঝগড়া হতো। বুধবার সকালে ঝগড়ার এক পর্যায়ে তার ভাই ইসহাক ঢালী, ভাবী হোসনে আরা ও ভাতিজা আশরাফুল ঢালী লোহার রড, শাবল দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে তার অপর ভাতিজা শারফুলকে গুরুত্বর জখম করে, অর্ধমৃত অবস্থায় একটি রুমে ফেলে রেখে ওই রুম তালা মেরে রাখে। পাগলা থানার ওসি মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, মা হোসনে আরাকে আটক করা হয়েছে। হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।