নূরুল হক, বিশেষ প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে ‘মণিরামপুর সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুমার বিশ্বজিৎ মন্ডলের পদত্যাগ ও বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে। মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ও প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে।

জানা যায়, মণিরামপুর পৌরশহরে ‘মণিরামপুর সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে’র প্রধান শিক্ষক কুমার বিশ্বজিৎ মন্ডলের দূর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও একক স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে তার পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া তিনি তৎকালিন ক্ষমতাসিন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে নিয়মনীতি বর্হিভূতভাবে কৃষি শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ বাগিয়ে নেয়াসহ দূর্নীতি, শিক্ষক ও কর্মচারীদের হয়রানী, বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ করা হয়। এ সময় শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবক সমাজ ও মণিরামপুরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবীকে সাধুবাদ জানিয়ে একাত্মা ঘোষণা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা মণিরামপুর পৌরশহরে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দফতরের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করে। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও প্রধান শিক্ষক কুমার বিশ্বজিৎ মন্ডল আত্মগোপন রয়েছে এবং বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধান শিক্ষক কুমার বিশ্বজিৎ মন্ডলের দূর্নীতির ও নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরকারী নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণসহ এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়ার কথা বলেও হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ার একাধিক রির্পোট প্রকাশিত হলেও ক্ষমতার দাপটে তিনি ছিলেন বহাল তরিয়াতে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কুমার বিশ্বজিৎ মন্ডলের ব্যাবহারিত মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবির প্রেক্ষিতে আমি প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছি। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন বলে আামকে জানিয়েছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন কি-না সে বিষয়ে আমাকে কিছু জানান নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন খান ছুটিতে আছেন বলেন তার স্বাক্ষাতকারটি নেয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা অফিসার জাকির হোসেন জানান, ‘শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি এবং তাদের দাবীর বিষয়ে নিয়মের মধ্যে থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছি।’ অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদৌও তার ছুটি আমি দেইনি। এ বিষয়ে তিনি মিথ্যা বলেছেন।