এম, এ রাজ্জাক নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় বাথইলে চারিদিকে বসতবাড়ি, মাঝখানে পুকুর। সেই পুকুরের কোনো পাড় নেই। এতে করে বিলিন হচ্ছে বসতভিটার জমি। এরই মধ্যে মাটি ভেঙে পুকুরে নেমে গেছে অনেকের ল্যাট্রিনের হাউজসহ রান্নাঘর।

গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটিও হুমকির মুখে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পুকুর মালিক রফিকুল ইসলাম গায়ের জোরে পাড় না বেঁধেই পুকুরে মাছ চাষ করছেন। এনিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না গ্রামবাসীর। প্রতিবাদ করায় গ্রামের এক যুবকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীসহ একাধিক মামলা করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লী বাথইল গ্রামে। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আতাউর রহমান জানান, ৮৯ শতক পুকুরের চারপাড়ে ১২টি বসতবাড়ি রয়েছে। বর্তমানে এর আয়তম দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ১৫০ শতক। এর মধ্যে ৮৬ শতক জমির মালিক গ্রামের রফিকুল ইসলাম। কিন্তু পুকুরটিতে কোনো পাড় নেই।

এ কারণে পুকুরপাড়ে বসবাসকারীদের বসতভিটার জমি ভেঙে বিলিন হচ্ছে পুকুরে। তাঁরও বসতভিটার অনেকখানি জমি পুকুরে বিলিন হয়েছে। ভুক্তভোগী শাহিনুর ইসলাম বুলবুল অভিযোগ করে বলেন, পুকুরটিতে আমার ৩ শতক সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া বসতভিটার বেশ কিছু জমি পুকুরে ভেঙে গেছে। অংশ হিসেবে আমাকে কোনদিন টাকা-পয়সা দেওয়া হয় না।

এসবের প্রতিবাদ করায় পুকুর মালিক রফিকুল ইসলাম তাঁর মেয়েকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীসহ বিষ দিয়ে মাছ নিধন ও পুকুর জবরদখলের মামলা করেছে। আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া বেওয়ার অভিযোগ, ‘জমি ভেঙে আমার রান্নাঘর ও ল্যাট্রিনের হাউজ পুকুরের চলে গেছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমার মেয়ে আঙ্গুরী খাতুনকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষরা। ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলা আদালতে চলছে।’

ভুক্তভোগী হারুন-অর-রশীদ বলেন, অনেক টাকা খরচ করে ল্যাট্রিনের হাউজ করেছি। সেটি পুকুরে চলে গেছে। এরই মধ্যে ধ্বসে গেছে গোয়ালঘরের একাংশ। প্রতিবাদ করায় বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সুনীল কুমার সেন অভিযোগ করে বলেন, ‘পুকুর মালিক রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন ঘটনায় আমাকে সাক্ষী মানেন। অথচ সেইসব ঘটনার আমি কিছুই জানি না। সাক্ষী না দেওয়ায় আমাকেও বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’ অভিযুক্ত পুকুর মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, পুকুরে সামান্য অংশ আছে বুলবুলের।

গ্রামবাসীর ভেঙে যাওয়া অংশ তাঁদের নিজ দায়িত্বে বেঁধে নিতে পারেন। বিভিন্ন বিষয়ে লোকজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করার কথা স্বীকার করেন তিনি। মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, বাথইল গ্রামের অভিযোগগুলো দুইজন অফিসার দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।