বাগেরহাট  প্রতিনিধিঃ স্কুলে আছে জমি নাই। অবাক হওয়ার মত ঘটনা হলেও এটিই বাস্তব ঘটনা। দাতা পক্ষের নামেই রয়ে গেছে জমি। আর ভোগ দখলেও তারা। সর্বোচ্চ ১০ শতক জমি স্কুলের জন্য ব্যবহার করা হয়। পার্শবর্তী সরকারি প্রাথমিকের জায়গাকে নিজেদের বলে চালিয়ে দেন তারা। একই জায়গায় বার বার ভবন নির্মাণ করা হয় আর
ভাঙ্গা হয়। আশ্চর্যজনক হলেও এভাবেই স্কুলটি স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৯৫ সাল যার প্রতিষ্ঠাকাল।
স্কুলের নাম বেতকাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের বেতকাশি গ্রামে অবস্থিত এটি। এ স্কুলের  নামে কোন জমির রেকর্ড নেই। অথচ এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ লুৎফর রহমান তালুকদার বললেন, স্কুলের নামে ৭০ শতক জমি আছে। কিন্তু কোন কাগজপত্র দেখাতে অপারগ তিনি। স্কুলের জমি দাতা তার পরিবার। স্কুলের শিক্ষার্থী  সংখ্যা প্রায় ৩শ’ জন। প্রধান শিক্ষকসহ ১০ জন স্টাফ এমপিওভুক্ত আছেন।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, স্কুলের একমাত্র ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে। স্কুলের ক্লাস চলছে পার্শ¦বর্তী প্রাথমিক স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারের নিচ তলায়। সবচেয়ে বড় অভিযোগ যে ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে সেটি ১৪৩
ফুট দীর্ঘ এবং চওড়া প্রায় ৩০ ফুট। একটি সেমিপাকা ভবন যা ২০১৯ সালে নির্মিত। যার রংয়ের কাজও বাকী ছিল। গত ৯ সেপ্টেম্বর মাত্র ৯৮ হাজার টাকায় নিজেদের লোককে নিলাম দেওয়া হয়।  অভিযোগ আছে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কেবল এডহক কমিটির সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যের স্বাক্ষর নিয়েই প্রধান শিক্ষক নিলাম করে দিলেন স্কুল ভবনটি। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক  শিক্ষা কর্মকর্তা আঃ হান্নান কোনকিছুই অবগত নন বলে জানিয়েছেন। একই কথা জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।
এর পূর্বে ওই একই জায়গায় একটি পাকা মেঝের কাঠের ঘর ছিল। এটিকে অপসারণ করে তখন সেমিপাকা ওই ভবন নির্মাণ করা হয়।
বর্তমানে স্কুলের নামে কোন জায়গা না থাকলেও ওই একই জায়গায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন পাশ হয়েছে এখন। আর এজন্যেই প্রায় দুই বছর পূর্বে নির্মিত ওই ভবন সরিয়ে জায়গা ফাঁকা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শামসুর রহমান তালুকদার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নামে জমির কথা স্বীকার করে বলেন, এরকম চিত্র তো বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ  প্রতিষ্ঠানের ।
যেখানে বিধি অনুযায়ী মাধ্যমিক স্কুলের জন্য মফস্বল এলাকায় ১.৫০ একর জমি থাকা চাই। সেখানে এ স্কুলের নামে কোন জায়গা না থাকলেও স্কুলটি প্রতিষ্ঠা, এমপিওভুক্তি বিভিন্ন দপ্তর হতে বিভিন্ন অনুদান সহ সর্বশেষ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার ৪ তলা ভবন অনুমোদন
কিভাবে হয়-জনমনে এখন এই প্রশ্ন।