ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রান্তিক ও চরাঞ্চলের কৃষকরা।

ডিজেল তেলের মূল্য লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। এ কারণে অনেক কৃষক বোরো আবাদ কমিয়ে দিয়েছেন। যদিও উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে— অল্টারনেটিভ ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রাই পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদন ব্যয় কমাতে পারেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসসূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ১৬ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্প ১ হাজার ৮৬টি ও ডিজেলচালিত ৪ হাজার ৮৫৫টি সেচযন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদ করবেন কৃষক।

সরেজমিন দুধকুমার নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ঘুর দেখা গেছে, চলতি ইরি-বোরো ধান চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। কোদাল দিয়ে জমি সমান করা, ক্ষেত চাষ করা, পানি দেওয়া, ক্ষেতের আইল ঠিক করা, আগাছা পরিষ্কার ও গোবর সার ছিটানোসহ নানা কাজে দারুণ ব্যস্ত কৃষক। বোরো মৌসুমে চরাঞ্চলের প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে ৫০ থেকে ৫৫ বার সেচ দিতে হয়। যাতে প্রয়োজন হয় গড়ে প্রায় ৬০ লিটার ডিজেল। এতে প্রতি বিঘায় কৃষকের অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ৯০০ টাকা।

উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের দুধকুমার নদীপাড়ের বাসিন্দা কৃষক হোসেন আলী জানান, নদীর চর জেগে উঠেছে। বোরো ধানের চারা লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। চরের বালুমাটিযুক্ত জমিতে সকালে পানি দিলে বিকালেই শুকিয়ে যায়। তাই প্রতিদিন সেচ দিতে হয়। তেলের দাম বাড়ায় অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

সোনাহাট ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক মালেক বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধিতে ধানের চাষ করাই দুষ্কর হয়ে যাবে। হালচাষের খরচ বেড়ে গেছে। আগে ট্রাক্টর দিয়ে প্রতি বিঘা জমি ৩০০ টাকায় চাষ দিতাম। এখন ডিজেলের দাম বাড়ায় ৪০০ টাকায় চাষ দিচ্ছি। স্যালো মেশিনে সেচের খরচ বেড়ে গেছে । এ জন্য এবার বোরো আবাদ কমিয়ে দিয়েছি। তবু হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বাড়তি খরচের কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা এডব্লিউডি এবং অন্যান্য সেচ সাশ্রয়ী যে প্রযুক্তিগুলো আছে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার দিয়ে ধান লাগানো এবং অন্যান্য প্রযুক্তি কৃষদের গ্রহণ করার জন্য পরামর্শ প্রদান করছি। আশা করছি এর ফলে কৃষক যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা সে ক্ষতি তারা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

কলমকথা/ সাথী