আগামী নভেম্বর মাসে শুরু হতে যাচ্ছে ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’। এবার ফাঁদের মাধ্যমে নয় বরং আধুনিক বক্সের মাধ্যমে বাঘ ধরা হবে। ইতিমধ্যে বক্সের মাধ্যমে বাঘ ধরার পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া সফল হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিফ্রিংয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন ডিএফও ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সিএফ মিহির কুমার দো, এসিএফ এমএ হাসান এবং ডিএফও নির্মল কুমার পাল। তারা জানান, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের জাতীয় পশু। সারা পৃথিবীতে আইইউসিএন বাঘকে অতি সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৩টি দেশে ৩ হাজার ৮৪০টি বাঘ রয়েছে। ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি।

সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের নিমিত্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় গত ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করেন। এসব প্রকল্পের মধ্যে সুন্দরবনের বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেন্সপন্স টিমের ৩৪০ জন সদস্য এবং ৪টি রেঞ্জের কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপের ১৮৫ জন সদস্যকে প্রশিক্ষণ প্রদান, পোশাক সরবরাহ, চার মাসের জন্য আবাসন ও সাপোর্ট বোট ভাড়া, ২০০টি বিশেষ ক্যাটাগরির ক্যামেরা সংগ্রহ, ব্যাটারি, এসডি কার্ড ইত্যাদিও জন্য ৩ কোটি ২৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে।

এছাড়া বাঘের আবাসস্থলে ২টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ, আগুন নেভানোর যন্ত্রাংশ, পাইপ ও দ্রোণ করা হবে। প্রায় ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের ফেন্সিং নির্মাণ করা হবে। ২০২২ সালে বিশ্ব বাঘ সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং বাঘ সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে এমন দেশে ২০ জনের শিক্ষা সফরসহ ৫শ জনের প্রশিক্ষণের সংস্থান প্রকল্পে রাখা হয়েছে। বাঘ ও বাঘের শিকার প্রাণী ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়ের জন্য সুন্দরবনের ১২টি মাটির কিল্লা স্থাপন করা হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএফও জানান, আগামী অর্থবছরের শুষ্ক মৌসুমে (শীতকালে) নভেম্বর মাসে প্রকল্পের কাজ করার প্রত্যাশা রয়েছে। সার্ভে করতে বছরখানেক সময় লাগবে। তবে ৪ মাস সময় লাগবে ক্যামেরা স্থাপনে। বাঘের পাশাপাশি বাঘের শিকার প্রাণী হরিণ ও বন্যশুকরও জরিপ করা হবে। তারা আরও বলেন, গত ৮-১০ বছরে সুন্দরবনে যেসব বাঘ মারা গেছে তাদের সবটিরই স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এবারের বাঘ ধরার জন্য ফাঁদ ব্যবহার করা হবে না। বরং আধুনিক বক্সের মাধ্যমে বাঘ ধরে গণনা করা হবে।