এসএম তাজাম্মুল, মণিরামপুর প্রতিনিধি: গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে তৃষ্ণার্থ প্রাণীকুল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, অপরিছন্ন পরিবেশ ও দূষিত পানি প্রতিনিয়ত জনজীবনকে ঠেলে দিচ্ছে বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে। যারই ধারাবাহিকতায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিন গেলেই বাড়ছে শিশু সহ বিভিন্ন বয়সী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম এই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি ৫০শয্যা হওয়ায় মাঝে মধ্যেই হাসপাতালের ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিতে হয় সেবা নিতে আসা রোগীদের।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ডায়রিয়ায় রোগী বাড়ার কারনে বর্তমানে বেড না পেয়ে ফ্লোরেই একাধিক রোগি ভর্তি আছে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত এসব রোগীর শরীরে পাওয়া যাচ্ছে কলেরার জীবাণু। মূলত অতিরিক্ত গরম ও খাওয়ার পানির মাধ্যমে এই জীবাণু মানুষের শরীরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

প্রায় একমাস ধরে মণিরামপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। যার গড় ভর্তির সংখ্যা চলতি মে মাসের ১৭তারিখ পর্যন্ত ২২০জন। এর মধ্যে বর্তমানে হাসপাতালের পুরুষ (৩০৭)নং ওয়ার্ডে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫জন, মহিলা ও শিশু(২০৫)নং ওয়ার্ডে ১১জন রোগী ভর্তি আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত একদিনে ৬ ঘন্টায় ৫জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়। এ নিয়ে চলতি মাসের হিসাবে দেখা যায় দৈনিক গড়ে ১২-১৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তন্ময় বিশ্বাস বলেন, মূলত খাওয়ার পানি কিংবা নানা ধরনের খোলা পানীয় থেকে ডায়রিয়া হয়। মূলত অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া ও খাওয়ার পানিতে কলেরার জীবাণুর প্রভাবে ডায়রিয়া আক্রান্তের হার বেশি। গত রমজানের আগ পর্যন্ত দৈনিক ৫-৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২-১৫ জনে। আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন(শিরায় পুশকৃত) সংকটের কারণে পার্শ্ববর্তী কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্যালাইন সরবরাহ করে আমাদের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি স্যালাইন সংকট কাটাতে সিভিল সার্জন যশোর এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী, খুব দ্রুত এই স্যালাইন সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে আমরা ১লক্ষ পিস খাবার স্যালাইন নিয়ে এসেছি। ধারনা করা হচ্ছে জৈষ্ঠ্যমাসের শেষের দিকে গরমের প্রভাব কমে গেলে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কমে যাবে।