এস এম রাকিব, জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া শেরপুর স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে অনশনে বসেছে হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত হওয়া ডলি বিশ্বাস
প্রায় ৩/৪ বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যানে তাদের দু’জনে পরিচয়, তারপর স্ব-শরীরে দেখাশোনা, আলাপচারিতায় প্রেমের সম্পর্ক হয়। ফেসবুক প্রেমিক কোটিপতি পিতার আদরের সন্তানও প্রেমের রাজ্য হাবুডুবু খেতে থাকে। এমনি এক প্রেমিক যুগলের খবর পাওয়া গেছে বগুড়ার শেরপুর এলাকায়। ফেসবুক প্রেমিক রাকিবুল হোসেন রাকিব শেরপুর উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের কোটিপতি রফিকুল ইসলামের ছেলে ও প্রেমিকা ডলি বিশ্বাস,বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার জামির বাড়িয়া গ্রামের মৃত শশী বিশ্বাসের মেয়ে।
এভাবে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক কয়েক বছর চলে আসলেও নিজেরা পৃথক(সনাতন ও মুসলিম) ধর্মের অনুসারী হওয়ায় অনেকটা বাঁধা হয়ে দাড়ায় তাদের প্রেমের শেষ পরিণতি বিয়ের পিঁড়িতে বসতে। এরই প্রেক্ষিতে প্রেম মানেনা কোন জাতি বা ধর্ম, তাইতো নিজেকে সনাতন ধর্মের অনুসারী হয়েও প্রেমের বলি হতে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে পরধর্ম(ইসলাম) গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয় প্রেমিকা ডলি বিশ্বাস । পরে ওই মেয়ে প্রেমিকের কথামতো গত ১৯ আগস্ট বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জেলা নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে নিজধর্ম(সনাতন) ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে নিজে মোছাঃ নিপা আক্তার নামে পরিচয় দিতে থাকে। ধর্মান্তরিতের পরে গত ২৩ আগস্ট একইভাবে জেলার নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে আরেক এফিডেভিটের মাধ্যমে ফেসবুক প্রেমিক রাকিবুল হোসেন রাকিবকে বিয়ে করে। তারপর থেকেই তারা প্রেমিক যুগল(বিবাহিত) বগুড়া শহরের একটি ভাড়া বাসায় কয়েকমাস যাবত বসবাস করে আসছিল।
তাদের প্রেমের বিয়ের ঘটনার প্রায় ১ বছর পার না হতেই ধর্মান্তরিত নিপা আক্তারের(ডলি বিশ্বাস) কপালে নেমে আসে কালো মেঘ। প্রেমিক রাকিব তার প্রেমিকাকে রেখেই তার নিজধর্ম(ইসলাম) এর আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করে বাড়ীতে আনে। এ খবর পেয়ে ওই প্রেমিকা নিপা আক্তার(ডলি বিশ্বাস) ১ আগস্ট রোববার বিকালে তার স্বামীর বাড়ী শেরপুর শহরের দুবলাগাড়ীস্থ বাসভবনে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে অনশন শুরু করে। এদিকে তার স্বামীর বাড়ীর লোকজন ওই মেয়েকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এর প্রেক্ষিতে ওই মেয়ে নিপা আক্তার(ডলি বিশ্বাস) স্থানীয় লোকজনের কাছে বিচার চেয়ে সমাজসেবক আমিনুল ইসলামের কাছে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে অসহায় ও ধর্মান্তরিত মেয়ে নিপা আক্তার (ডলি বিশ্বাস) তার সাথে কোটিপতির ছেলে রাকিবের প্রেম ও বিয়ে নামের প্রতারণার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন।
করুন আর্তনাদে ভূক্তভোগী ওই মেয়ে নিপা আক্তার বলেন, আমি এখন ধর্মান্তরিত, হিন্দু সমাজেও তো আমাকে নিবেনা, তাহলে কোথায় যাবো? আমার সর্বস্ব লুট করে নিয়েছে কোটিপতির লম্পট ছেলে রাকিকুল হোসেন। সুষ্ঠ বিচার না পেলে এমনকি স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে আমার মৃত্যু ছাড়া কোন উপায় নাই। তাছাড়া প্রেমিক রাকিব সম্প্রতি আরেক মেয়েকে বিয়ে করেছে এমন খবর পেয়েই প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি বিচার পেতে আইনের আশ্রয় নিবেন বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে স্থানীয় সমাজসেবক ও হাট ইজাদার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, ধর্মান্তরিত হওয়া ওই মেয়েটির পিতা-মাতা বা আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফিরে যাওয়ার পথ বন্ধ হওয়ায় মেয়েটি এখন অসহায়। ওই মেয়ের মুখে বিস্তারিত শুনে আমি তাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বিষয়টা অমানবিক ও অভিনব প্রতারণা!
এ বিষয়ে প্রেমিক রাকিবুল হোসেন রাকিবের মোবাইল ফোনে না পেয়ে তার কোটিপতি পিতা রফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইল মারফত যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার ছেলে ওই মেয়েকে বিয়ে করেছে কিনা আমি জানিনা, তবে ওই মেয়ে তার বাড়ীতে অবস্থান নেয়ার কথা স্বীকার করলেও তাকে কোন মারপিট করা হয়নি বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ধর্মন্তরিত কোন বিয়ের দাবিতে অনশন করছে বলে আমার জানা নেই
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।