লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ তিন বছর ধরে লিজ ছাড়াই চালু কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটির খাবারের গাড়ি দ্রুত লিজ দিয়ে সরকারের রাজস্ব বাড়াতে লিখিত অভিযোগ দায়ের।
ট্রেনটির খাবার গাড়ি লিজ দিয়ে সরকারের রাজস্ব বাড়াতে রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন দফতরে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মোজাম্মেল হক নামে একজন রেল কর্মচারী।
অভিযোগে জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের চারটি বিভাগের মধ্যে লালমনিরহাট অন্যতম। লালমনিরহাট রেল বিভাগের আওতায় প্রতিদিন চলাচল করছে আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস। এসব আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রীদের জন্য রয়েছে খাবারের হোটেলের ব্যবস্থা। এসব খাবারের গাড়ি বার্ষিক লিজ দিয়েও রাজস্ব আদায় করছে সরকার।
প্রতি বছর রেলওয়ে সব বিভাগের আন্তঃনগর ট্রেনের খাবারের গাড়ি দরপত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দর দাতার নামে বার্ষিক লিজ বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ১৮২টি আসনের কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটির জন্মলগ্ন থেকে খাবারের গাড়ির কোনো দরপত্রই আহ্বান করা হয়নি। রেল বিভাগের নাম করে খাবারের গাড়ি রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তার দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের মধ্যে ডিডি-৩ এর পদের অবসরপ্রাপ্ত কালীকান্ত দাস, মিয়াজান ও সাইদুর রহমান। তারা অবসরে গিয়েও রেলে ব্যবসা করছেন। এতে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার দখলে থাকায় এ ট্রেনের খাবার গাড়ির কোন তথ্যই নেই লালমনিরহাট রেল বিভাগে।
গত ১৪ ডিসেম্বর “৩ বছরেও লিজ হয়নি কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের খাবার গাড়ির” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যা মুহুর্তে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়।
এ ছাড়াও এ ট্রেনের খাবার গাড়িতে ফেন্সিডিল, গাঁজা ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক পাচার হচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই কর্মচারী। এ কারনে খাবার বিক্রিতে তেমন মুনাফা না এলেও মাদক পাচারের মাধ্যে মোটা অংকে মুনাফা করছে এ চক্রটি। এমনটা দাবি করে দ্রুত তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে রেলওয়ের মহাপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রেল কর্মচারী মোজাম্মেল হক।
অভিযোগকারী মোজাম্মেল হক মুঠো ফোনে বলেন, জন্ম লগ্ন থেকে এ ট্রেনের খাবার গাড়ি লিজ দেয়া হয়নি। উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তা অবসর নিয়ে রেলের নাম করে নিজেরা ব্যবসা করছেন এ ট্রেনে। বিষয়টি নিয়ে গনমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই রেলকর্মচারী নয় দেশের নাগরিক হিসেবে লিখিত অভিযোগ করেছি। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এ ট্রেনের খাবার গাড়ি থেকে ৭০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, দরপত্র না হলেও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের খাবার গাড়ি থেকে বেশি আয় করছে রেলওয়ে। মাদক পাচারের বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।