এমডি জিলহজ খান,কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাওতা গ্রামে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনরত এক কলেজ ছাত্রী।
সরজমিনে ৪ মে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এক কলেজ ছাত্রী বিয়ের দাবিতে অনশন করছে। সেখানে কয়েকশ গ্রামবাসীদের ভিড়ও লক্ষ্য করা যায়।
কলেজ ছাত্রী জানায়, ২০১৮ সালে চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাওতা গ্রামের তোজাম্মেল হক এর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে প্রথম পরিচয় হয় তার। এরপর থেকে আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বর্তমানে মেয়েটি কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত এবং জাহাঙ্গীর আলম একই কলেজের অর্থনীতি মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। একই সাথে পড়ালেখা করার কারণে সম্পর্কটা আরো বেশী গভীর হয়। সেই সাথে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্কও গড়ে উঠে। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের হলরুমে তারা শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হন এবং একবার এক স্যার/ কর্মচারী দেখে ফেললে তাদেরকে বকাবকি করেন এবং পরবর্তীতে এ ধরণের কর্মকাণ্ডে জড়িত না হবার জন্য বলেন।
মেয়েটি আরো জানায়, সম্পর্কের মাঝামাঝিতে এসে মেয়েটির হটাৎ বিয়ে হয়ে যায়। এরপর ছেলেটির কারণে মেয়েটির আর শশুর বাড়িতে যাওয়া হয়নি এবং গত ১বছর পূর্বে মেয়েটি জাহাঙ্গীরের চাপে পড়ে ডিভোর্স দিতেও বাধ্য হয়। পবিত্র কোরআন শরীফ স্পর্শ করে তাকে ছেড়ে না যাওয়ার কথা স্বীকার করিয়ে নেয় জাহাঙ্গীর এবং তাকে বলে, কখনো আমার ফোন দীর্ঘ সময় বন্ধ ও যোগাযোগ না করতে পারলে তুমি আমাদের বাড়ি চলে আসবে।
গত বেশ কয়েকদিন যাবৎ জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ না করতে পেরে ৪ মে সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে মেয়েটি জাহাঙ্গীরের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়। এরপর জাহাঙ্গীরের মা ও বড় ভাই শামীম তাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং বাটাম দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। সেই সাথে জাহাঙ্গীরকেও মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে।একপর্যায়ে মেয়েটি জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে অবস্থান নিলে এলাকার বেশ কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বর এসে ইফতারের পর বিষয়টি সমাধান করে দেবে মর্মে পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে মেয়েটিকে পাঠিয়ে দেয়। এই ফাঁকে জাহাঙ্গীরকে অন্য কোথাও কারোর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় মেয়েটি।
আত্মীয়ের বাড়িতে মেয়েটি অপেক্ষা করতে করতে এক সময় ইফতার শেষ হয়ে তারাবীর নামাযও শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে মেয়েটি মাতব্বরদের একজনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কোনো সমাধান না পেয়ে পুনরায় রাত দশটার দিকে জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। সে সময় সেখানে কয়েকশ এলাকাবাসী ভিড় জমায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বাঁধ বাজার ক্যাম্পের আইসি, টুয়াইসি সহ পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়।
এখবর লেখা পর্যন্ত পুলিশের দলটি সেখানে ঘটনাটির সমাধানের জন্য অবস্থান করছিলেন। তবে ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও পুলিশের দলটি ছেলেটিকে খুজেঁ আনার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেননি। এমনকি ছেলের পরিবারের সাথে কথা না বলে বাইরে নিঃশ্চুপ অবস্থান নিতে দেখা যায় তাদের।
উপস্থিত এলাকাবাসীরা জানান, সকাল থেকেই না খেয়ে মেয়েটি জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন। জাহাঙ্গীরের বাড়ির লোকজন মেয়েটিকে মারধরও করেছে। বিষয়টির সমাধান করা খুব জরুরী। ছেলেকে ছাড়াও মেয়েটিকেও নিয়েও চলছে নানা সমালোচনা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।