কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে স্ত্রীর দাবিতে সাজেদা খাতুন নামে এক গার্মেন্টস কর্মী তার স্বামীর বাড়িতে গেলে ওই পরিবারের লোকজন মারপিট করেছে। শনিবার রাতে আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা আব্দুল আহাদ বাদি হয়ে রোববার সকালে কেশবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, কেশবপুরের বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের গার্মেন্টস কর্মী সাজেদা খাতুন (২৯) ও একই গ্রামের আমজেদ হোসেন মোড়লের ছেলে ইলিয়াস হোসেনের (৩৩) মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁরা একে অপরকে ভালোবেসে গত ২০ মে ঢাকাতে নোটারি পাবলিক কার্যালয় থেকে ৩ লাখ এক টাকা দেনমোহর ধাযর্য করে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে সাজেদা খাতুনের পরিবার মেনে নেয়। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে ওই যুবক তার বাড়িতে নিয়ে যাবে বলে সাজেদা খাতুনের বাবার বাড়িতে রেখে ভরণ পোষণ দেওয়াসহ মেলামেশা করতো। ওই তরুণীর বাবা আব্দুল আহাদ মেয়েকে তার (ইলিয়াস হোসেনের) বাড়িতে নিয়ে যেতে বললে নানান তালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সাজেদা খাতুন জানতে পারে তার স্বামী ইলিয়াস হোসেন ২৪ জুলাই (শনিবার) বিকেলে অন্যত্র বিয়ে করতে যাবে বলে সকল প্রস্তুতি নেয়। বিয়ে ঠেকাতে ও স্ত্রীর দাবি নিয়ে ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে তরুণী তার স্বামীর বাড়িতে হাজির হন। ওই বাড়িতে বিয়ের আয়োজন দেখে সাজেদা খাতুন অন্যত্র বিয়ে করার কারণ জানতে চাইলে ও তাকে স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলতে বললে ইলিয়াস হোসেনসহ তার পরিবারের আরও ৫ থেকে ৬ জন ক্ষিপ্ত হয়ে চুলের মুঠি ধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে তাকে বেধড়ক মারপিট করে।

এ বিষয়ে সাজেদা খাতুন বলেন, ইলিয়াস হোসেনের সাথে ৭ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে বিয়ে করলেও এখন স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়ে ঘরে তুলছে না। ইলিয়াস হোসেনের বাড়িতে স্ত্রীর দাবি নিয়ে ও বিয়ে ঠেকাতে গেলে ৩ ঘন্টা আটকিয়ে রেখে মারপিট করে। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বর জানতে পেরে ওই বাড়িতে গেলে আমার কোন কথাই শোনেননি।

সাজেদা খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে আরও বলেন, ‘ইলিয়াস হোসেন বেকার থাকায় গার্মেন্টেসে কাজ করে তাকে বিভিন্ন সময়ে আমার বেতনের টাকা দিয়েছি। সে এমন বিশ্বাস ঘাতকতা করবে আমি কখনও বুঝতেই পারিনি।’

এ বিষয়ে ইলিয়াস হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাজেদা খাতুন নামে কাউকে চিনি না। মারধর করার কোন ঘটনা ঘটেনি। আর চেয়ারম্যানের কাছে শুনলে পাওয়া যাবে সবকিছু।’

বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে গিয়ে দু’পক্ষকেই রোববার বেলা ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু মেয়ে পক্ষ না আসায় কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

কেশবপুর থানার উপ-পরিদর্শক লিখন কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনায় মেয়ের বাবা বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটির তদন্ত চলছে।