পাবনার চাটমোহর উপজেলায় এখনো এমন বেশকিছু গ্রাম রয়ে গেছে যেখানে পাকা রাস্তার অভাবে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও চাটমোহরের নিমাইচড়া, ছাইকোলা ও হান্ডিয়াল ইউনিয়নের অন্তত ৭টি গ্রাম উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
হান্ডিয়াল ইউনিয়নের নবীন ও চরনবীন, ছাইকোলা ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া, বরদানগর, নিমাইচড়া ইউনিয়নের বিন্যাবাড়ি, গৌড়নগর-করকোলা হয়ে মির্জাপুর অভিমুখী প্রায় দশ কিলোমিটার গ্রামীণ উঁচুনিচু কাঁচা সড়কের কোথাও লাগেনি পিচের ছোঁয়া। এ দশ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এক থেকে দেড় কিলোমিটার রাস্তা হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবিকরণ) করা হলেও বাকি পুরো রাস্তাই কাঁচা।
দশ কিলোমিটার সড়কের সঙ্গে এই ৭ গ্রামেরই সম্পর্ক নিবিড়। দশ কিলোমিটারে উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় ৭ গ্রামের উন্নয়নই থমকে আছে। এ ডিজিটাল যুগেও যেন অন্যগ্রহে বসবাস এসব এলাকার মানুষের।
লাঙ্গলমোড়া গ্রামের বাসিন্দা বাবলুর রহমান বলেন, হান্ডিয়াল ইউনিয়নের নবীন গ্রাম থেকে ছাইকোলা ইউনিয়নের চরনবীন-বরদানগর এবং নিমাইচড়া ইউনিয়নের গৌড়নগর-করকোলা হয়ে যে রাস্তাটি মির্জাপুর পর্যন্ত চলে গেছে, প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তার কোথাও পাকা রাস্তা হয়নি। যৎসামান্য রাস্তা এইচবিবিকরণ করা হলেও তা চলাচলের অনুপযোগী। এ রাস্তায় রিকশা, ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস, ট্রাক কিছুই চলাচল করে না। পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, এ এলাকার মধ্যে চরনবীন হামিদা মমতাজ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চরনবীন মাদ্রাসা, লাঙ্গলমোড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বরদানগর মাদ্রাসা, বিলচলন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে শত শত শিক্ষার্থীকে পায়ে হেঁটে প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে কষ্ট করে পায়ে হেঁটে কোনরকমে যাতায়াত করলেও বছরের প্রায় ছয় মাস রাস্তাটি কর্দমাক্ত থাকে। তখন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় কষ্টে হাট, বাজার, উপজেলা সদরসহ গন্তব্যে যাতায়াত করতে হয়।
নবীন গ্রামের আরমান হোসেন বলেন, গ্রামে চলার মতো কোন রাস্তা নেই। যে কাঁচা রাস্তা আছে বর্ষাকালে সেটিও ডুবে যায়। তখন নৌকাই হয় চলাচলের একমাত্র ভরসা।
চরনবীন হামিদা মমতাজ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকরাম হোসেন, বরদানগর গ্রামের রতন হোসেন, বিন্যাবাড়ি গ্রামের শাহিনুর রহমান রিপন, গৌরনগর গ্রামের জিয়া এবং করকোলা গ্রামের খিতিশ চন্দ্র দাসসহ এলাকার অন্যান্যরা জানালেন, গুমানী নদীর পাড়ের এ এলাকার রাস্তা ঘাটে উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় পরিবর্তন ঘটছে না তাদের জীবন মানের। পাকা রাস্তা না থাকায় এবং নদীর প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক সময় রোগী এবং সন্তান সম্ভবা মাকে জরুরীভাবে হাসপাতালে নিতে পারেন না তারা।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ছাইকোলা থেকে মির্জাপুর জিসি রোড ভায়া বরদানগর-লাঙ্গলমোড়া রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ। তবে এ রাস্তাটি এখনো প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত হয়নি, প্রক্রিয়াধীন আছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।