কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ প্রতিদ্বন্দ্বিতা জীবনের একটি বড় অংশ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজেকে উপাস্থাপন করতে চাওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। ইচ্ছে আর যোগ্যতার মাপকাঠিতে কেউ নিজের জন্য, কেউ সমাজের সেবক হওয়ার জন্য নিজেকে উপস্থাপন করতে চায়।
জনগণের সেবক হওয়ার এমনই অদম্য ইচ্ছা নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, পরে আবার এমপি নির্বাচনের এরপর এবার ইউপি নির্বাচনে দাড়িয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনার পাত্র হয়ে উঠেছেন কুড়িগ্রামের আব্দুল হাই মাস্টার নামের এক নির্বাচনী প্রার্থী। তিনি চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আগামী ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়ন, পাথরডুবি ও শিলখুড়ি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নে মোটর সাইকেল মার্কা নিয়ে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল হাই মাষ্টার। আব্দুল হাই মাষ্টার বিগত সময়ে উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপর ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাকের পার্টির ব্যানারে কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী) আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সেই থেকে প্রতিটি নির্বাচনে হারলেও অংশ গ্রহন করতে পিছপা হননি আব্দুল হাই মাস্টার। এবারেও তিনি চেয়ারম্যান পদে ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারনাও অনান্যদের চেয়ে ভিন্নরকম।
ইউপি নিবার্চনকে ঘিরে অন্য প্রার্থীর প্রচারনা মিটিং মিছিল কর্মীদের নিয়ে জমকালো শোডাউনের আয়োজন করলেও আব্দুল হাই মাস্টার একাই চালিয়ে যাচ্ছেন তার নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা। শুধু একটি হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে নিজেই নিজের প্রচারনায় বেড়িয়ে পড়ছেন ভোটারের কাছে। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো সাইকেলে কখনো অটো রিকশা করে পথ ঘাট বাজার বন্দরে চালাচ্ছেন নিজের প্রচার প্রচারনা। মোটর সাইকেল মার্কায় ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। নির্বাচনে তার কোনো কর্মী নেই, নেই কোন শোডাউন। নেই কোন মিটিং মিছিল। প্রার্থী নিজেই হ্যান্ড মাইক নিয়ে অটোতে করে তার মোটর সাইকেল মার্কায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় ভোটাররা বলেছেন, আব্দুল হাই মাষ্টার নামের চেয়ে হাই পাগলা নামে তিনি বেশ পরিচিত। নির্বাচনে দাড়ানো তার নেশা। এমন কোন নির্বাচন বাকি রাখেন নাই যে ওই নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাদ রেখেছেন। ইউপি নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন এমনকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আব্দুল হাই মাস্টার।
এলাকাবাসীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকেই বলছেন, আব্দুল হাই মাস্টার যখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, সে সময় নিজ হাতে হাট বাজারের ড্রেন বাথরুমের ময়লা পরিস্কার করতেন বলে হাই পাগলা নাম হয়। সেই থেকে সবাই তাকে হাই পাগলা নামে চেনেন।
আব্দুল হাই মাস্টার বলেন, মানুষের সেবা করতে আমার ভালো লাগে। আজীবন সুখে দুঃখে মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবা করতে চাই। এ কারনে বিভিন্ন ইলেকশনে আমি থেমে থাকি না। কেননা আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানব সেবা করা।
আমার কোনো টাকা পয়সা নেই। জনগণই আমার সব। জনগণ যদি চায়, আমাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে আমাকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান বানাবে নিশ্চয়ই। আমি বরাবরই জনগণের সেবা করতে প্রস্তুত।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।