পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যটনকন্দ্রে এলাকায় করোনা নিয়ে জনসচতেনতামুলক প্রচারকাজ তদারক করতে সরকারি কাজে বাঁধা ও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেন কলাপাড়া উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। সোমবার রাত আটটার সময় কুয়াকাটা পৌরসভার চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটছে। ইউএনওকে রক্ষা করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছে তাঁর গাড়ি চালক মো. আফজাল হোসনে (৩৮) এবং দেহরক্ষী সঞ্জয় দাস (২৯)।

ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় বিকেল থেকে কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশ ও উপজলো প্রশাসন যৌথভাবে করোনা সচেতনতায় প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছিল। ইউএনও কুয়াকাটা এলাকায় অবস্থান করে সচেতনতামূলক এ কার্যক্রম তদারক করছিলেন। এ সময় ইলিয়াস শেখ নামে এক ব্যক্তি এসে সরকারী কার্যক্রমে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে। এসব কাজ কেন করা হচ্ছে এতে কোনো লাভ নেই জনগণের এরকম নানা কথা সে বলতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে ইউএনও ইলিয়াস শেখকে আটক করার চষ্টো করলে সে দৌড়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরই ইলিয়াস শেখের নেতৃত্বে বাচ্চু শেখ রাব্বী,খলিল, হাসিবসহ পাশের বস্তি এলাকার ৭০/৮০ জন লোক সদলবল এসে ইউএনও উপরে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে গেলে টুরিস্ট পুলিশের সাথে লাঠিচার্জ হয়ে এসব এক পর্যায়ে ইউএনওর সরকারী গাড়ির ওপর এরা ইটপাটকলে নিক্ষেপ করে। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনওকে স্পট থেকে সরাতে এগিয়ে গেলে তাঁর গাড়ি চালক মো. আফজাল হোসনে (৩৮) এবং তাঁর দেহরক্ষি সঞ্জয় দাস (২৯) সন্ত্রাসীদরে হামলায় আহত হয়।
কলাপাড়া উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তা আরও জানান,

আমরা আটটার সময় মাক্স পড়া নিয়ে সচেতনতা করতে ছিলাম বিচে ও জিরো পয়েন্টে। হোটেলের মাঝখানে বাসকাউন্টারে ১০/১২ জন স্বাস্থ্য বিধি না মেনে আড্ডা দিচ্ছিলো আমরা সেখানে উপস্থিত হলে দৌড়ে ওরা পালিয়ে যায়। ২ জনকে আমরা ধরে ফেলছি এরপরে ইলিয়াস শেখ ও তালাশ টিমের এরা পাশ থেকে এসে আমাদের চ্যালেন্জ করে আমরা কার্ড দেখতে চাইলে তারা কার্ড দেখাতে পাড়েনি এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে।

ওরা দুই,তিনজন পিছনে গিয়ে ডাক দিলে ৭০/৮০ জন এসে আমাদের কাজে বাঁধা দেয়,এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে তারা ইলিয়াস শেখের নেতৃত্বে আমাদের উপরে হামলা করতে আসলে আমাদের সাথে লাঠিচার্জ হয়ে। আমরা স্পষ্ট থেকে সরে এসে থানা পুলিশকে জানালে তারা নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরকারি কাজে বাঁধা দেয়ার এ ঘটনায় অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বলেন, আমি উদ্ভুত পরিস্থিতির খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। দেখি ইউএনওকে বেশ কিছু লোকজন তার সাথে বিতর্ক করছেন । আমিসহ কয়েকজন তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। ইউএনওকে সন্ত্রাসী ওইসব লোকে আইনের কাজে বাঁধা দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, হামলার নেতৃত্বদানকারী ইলিয়াস শেখ হলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কুয়াকাটা পৌর শাখার সাংগঠনকি সম্পাদক।
এ নিয়ে ইলিয়াস শেখের বক্তব্য জানার জন্য তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি ।তবে তাঁর ভাই ইসমাইল শেখ বলেনন , ‘আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে শুনেছি ইউএনও সাহেবের লোকজন আমার ভাইকে মারধর করেছে। তবে তাঁর কী অপরাধ ছিল সেটা আমরা বুঝতে পারলাম না।’
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অবশ্যই সরকারী কাজে বাঁধা দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।