রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে শেষ হয় আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিটিতে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোটগ্রহণ করা হবে। ওইদিন সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন কমিশনের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আজ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হবে ভোটের সরঞ্জাম।
রংপুর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, রোববার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে প্রচার-প্রচারণা। মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত টিম রয়েছে। কোথাও আচরণবিধি ভঙ্গ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, ২১৯টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ইভিএম মেশিন এসেছে। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে মক ভোটিং করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি টিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে নগরীতে বিজিবি ও র্যাবের টহল শুরু হয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর সিটি করপোরেশন রংপুরে ভোটের বাকি আর মাত্র একদিন। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) উত্তরের এই সিটিতে তৃতীয়বারের মতো ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় এক মাস ভোটের মাঠ সরগরম ছিল প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায়। এবার শুরু হয়েছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। রংপুর সিটি নির্বাচনে কে হাসবেন শেষ হাসি- সেটার আলোচনা চলছে এখানকার মানুষের মুখে মুখে।
এই সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মোট নয়জন প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় রয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে একজন সদ্য সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এই দুজনের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন। তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন। যদিও তিনি ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন।
এর আগে রোববার দিনভর প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে ওঠে রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গণসংযোগ, পথসভা আর উঠান বৈঠক করে ভোটারদের কাছে দোয়া ও ভোট চান প্রার্থীরা।
শেষ দিন নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ার পাড়া, ইসলামপুর বাজার, খটখটিয়া, নগরীর মার্কেট, বাজার ও বাসাবাড়িতে গণসংযোগ করেন অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা। এ সময় দলের বিপুল নেতাকর্মী তার সঙ্গে ছিলেন।
পথসভায় ভোটারদের উদ্দেশে হোসনে আরা লুৎফা বলেন, ‘এই নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আমরা কারচুপির ভোটে বিশ্বাসী নই। জনগণের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হতে চাই।
আপনাদের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
শেষ দিন নগরীর হাজিরহাট, মুচিপট্টি, জীবন বীমা মোড়, বিভিন্ন এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। নগরীর হাজিরহাটে নির্বাচনী পথসভায় তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার কথা অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আশা রাখছি।
তবে নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম ও কারচুপির চেষ্টা করলে কঠোরভাবে প্রতিহত করবো আমরা। নগরীর ২২৯টি ভোটকেন্দ্রে আমাদের নেতাকর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো অবস্থান করবে। কোনো অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।’
সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মোট নয়জন প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় রয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে একজন সদ্য সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এই দুজনের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন। তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে সরব রয়েছেন। যদিও তিনি ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন।
নগরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার রংপুর সিটি নির্বাচনে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াই হতে পারে। জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রংপুরে একদিকে লাঙ্গল কিছুটা এগিয়ে থাকলেও সরকারে থাকায় উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে নৌকার সম্ভাবনাও কম নয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মিলনের সম্ভাবনার কথাও বলছেন কেউ কেউ। বর্তমান সরকারের অধীনে ভোট বর্জন করায় এই সিটিতেও কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। দলটির ভোট বিভিন্ন প্রার্থীর বাক্সে ভাগাভাগি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবারের এই নির্বাচনে সোয়া চার লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭৯ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৬৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩৩টি ওয়ার্ডের ২২৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে এবং ভোটকেন্দ্রগুলো থাকবে সিসিটিভির আওতায়।
২০১২ সালের ২৮ জুন পৌরসভা থেকে ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু প্রথম নগরপিতা নির্বাচিত হন। তবে দ্বিতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার কাছে হেরে যান তিনি। এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে তৃতীয়বারের নির্বাচন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।